কলকাতা, 21 মার্চ: গরুপাচার মামলায় ধৃত বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রার আগে পর্যন্ত বারবার সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে দল । এই মামলায় মঙ্গলবারই অনুব্রতর 13 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত ৷ সূত্রের খবর, তিহার জেলেই জায়গা হতে চলেছে কেষ্টর ৷
ঠিক এইদিনেই বীরভূমের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দেওয়া হল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ৷ এদিন দলের তরফে এক সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা ৷ তৃণমূল ভবনে এদিন তাঁর এক মন্তব্যের পরেই অনুব্রতকে নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান বিষয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে ৷ প্রশ্ন উঠছে আদৌ কি এই মুহূর্তে অনুব্রত মণ্ডলের পাশে রয়েছে দল ?
রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি'র হাতে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে দল। গ্রেফতারির পরেই তাঁকে মন্ত্রিসভা এবং দলের সব পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে । একইভাবে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষ এবং শান্তনু বন্দোপাধ্যায়কেও তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে । কিন্তু একমাত্র অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরেও তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন । ফলে দলের অন্যান্য নেতা নেত্রীরাও সরাসরি কেষ্টর বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পাননি (speculation on TMC and Anubrata Mondal equation) ।
কিন্তু মঙ্গলবার অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) নিয়ে করা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, দল কাউকে দুর্নীতি করতে বলেনি । দুর্নীতি যে বা যাঁরা করেছেন এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার । দুর্নীতির দায় তাঁকেই নিতে হবে । দল কারও দায় নেবে না ।
এরপরই সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ কথা বলেন শশী পাঁজা ৷ নাম না করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন,"দুর্নীতির প্রশ্নে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে দল । সেখানে একজন জেলা সভাপতি তো খুব ছোট ব্যাপার ।" ভুলে গেলে চলবে না এই মুহূর্তে অনুব্রত মণ্ডল বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে আছেন । আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এবার অনুব্রত মণ্ডলের মাথার উপর থেকে উঠছে তৃণমূলের হাত !
আরও পড়ুন: আদানি ও মেহুল বিজেপির সবচেয়ে ভালো বন্ধু, কটাক্ষ মমতার
যদিও এখনই বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলার সময় আসেনি । কারণ এই মুহূর্তে বীরভূম জেলায় দলের সংগঠন দেখার দায়িত্ব নিজের হাতেই নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো । ওড়িশা থেকে ফিরে তিনি বীরভূম নিয়ে বৈঠক করবেন । সেই বৈঠকে অনুব্রতর ভাগ্য নির্ধারণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে । তার আগে কেষ্টর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ ৷