কলকাতা, 22 মে: রাজ্যে বেআইনি বাজি কারখানা ও বাজি বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ হোক ৷ এমনটাই চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত ও পরিবেশবান্ধব বাজি তৈরির ক্লাস্টার গঠন করতে চাইছে রাজ্য সরকার ৷ সোমবার নবান্নে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয় ৷ সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সবুজ-বাজির ক্লাসটার তৈরি করতে একটি কমিটি গঠন করা হবে ৷ মুখ্যসচিবের নেতৃত্ব এই কমিটি তৈরি করা হচ্ছে ৷ দু’মাসের মধ্যে কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে ৷
আজ নবান্নে মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং ফিরহাদ হাকিম সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, সবুজ-বাজির ক্লাস্টার কীভাবে তৈরি করা যায়, তা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করবে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটি ৷ তাঁরা 2 মাস পরে রিপোর্ট জমা দেবেন ৷ সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিটি জেলায় অনুর্বর জমি বাছাই করে, সেখানে সবুজ-বাজির ক্লাস্টার তৈরি করা হবে ৷ ফিরহাদ জানিয়েছেন, সরকার চাইছে বৈধ উপায়ে বাজির ব্যবসার মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে ৷
তিনি এও জানান, রাজ্যে এই মুহূর্তে সবুজ বাজি ছাড়া অন্য কোনও বাজি বৈধ নয় ৷ কিন্তু, সাধারণ মানুষ রুজি-রুটির খাতিরে বিপজ্জনক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকুক চাইছেন না, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সরকার চাইছে, বেআইনি কারখানা বন্ধ করে বৈধ উপায়ে বাজির তৈরির ক্লাস্টার করতে ৷ তবে, এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে সবুজ-বাজির ক্লাস্টার তৈরির বিষয়টি ছিল না ৷ মুখ্যমন্ত্রী নাকি নিজেই শেষবেলায় এই প্রসঙ্গ তোলেন ৷ নবান্ন থেকে বেরিয়ে তিনি বজবজে বেআইনি বাজি বিস্ফোরণের ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্য রওনা হন ৷
আরও পড়ুন: বজবজ বিস্ফোরণ-কাণ্ডে পুলিশের বাজেয়াপ্ত বারুদে আগুন, ঘটনার তদন্তে সিআইডি
কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে এতদিন তাহলে সরকার কেন উদ্যোগ নেয়নি ৷ যেখানে বেআইনি বাজি তৈরির ফলে প্রাণহানির আশঙ্কা আছে, তা সরকার জানা সত্ত্বেও কীসের অপেক্ষা করছিল? এগরা ও বজবজের ঘটনায় 14 জনের প্রাণ যাওয়ার পর এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করল সরকার ৷ তবে, বহু বছর ধরে বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করতে ও বাজি বিক্রি করা নিয়ে পরিবেশবিদরা সরকারের কাছে আবেদন করে আসছেন ৷ পরিবেশ আদালতের এ নিয়ে একাধিক নির্দেশ রয়েছে ৷ সেই সময় কেন সরকার উদ্যোগ নেয়নি ? তবে কথায় আছে, ‘‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার ৷’’ আশা করা যায়, সরকারের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এই মৃত্যু মিছিল বন্ধ হবে ৷