কলকাতা, 6 সেপ্টেম্বর : অধীর গড়ে তৃণমূলের পতাকা তোলার জন্য তাঁকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন নেত্রী । লোকসভা নির্বাচনের আগে মুর্শিদাবাদের জমি আঁকড়ে থেকে লড়াই চালিয়েছিলেন । দাবি করেছিলেন, অধীরকে হারিয়ে তবেই ফিরবেন । কিন্তু কংগ্রেসের ভরাডুবির মরসুমে অধীররঞ্জন চৌধুরি নিজ বিক্রমে প্রমাণ করেছেন তাঁর জনপ্রিয়তা । এবার সেই মুর্শিদাবাদ নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিধানসভায় ধুন্ধুমার বেধে গেল । কংগ্রেস ও তৃণমূল বিধায়কদের শান্ত করতে শেষ পর্যন্ত আসরে নামতে হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে । তাঁর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হয় ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
আজ প্রথমে কংগ্রেস বিধায়করা শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে থাকেন । রাজ্য পরিবহন দপ্তরে একাধিক ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন তাঁরা । NBSTC-তে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতি হচ্ছে বলে প্রথমে দাবি তোলেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞাঁর বিধায়ক প্রতিমা রজক । তিনি বলেন, "আমি শুধু জানতে চেয়েছিলাম, আমাদের NBSTC সার্ভিসে বাস চালক বা কন্ডাক্টর কি সরকারিভাবে নিয়োগ হচ্ছে না কোনও এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ হচ্ছে? আর তাতেই চটে যান শুভেন্দুবাবু ।" তিনি আরও বলেন, "একজন মন্ত্রী কখনই একজন বিধায়ককে বলতে পারেন না যে তার দলকে বিলীন করে দেবে । তৃণমূলের কোনও গণতন্ত্রই নেই ।" শুভেন্দুবাবুর, "আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ থেকে একটি আসনও জিততে পারবে না কংগ্রেস । সেখান থেকে কংগ্রেসের একজন বিধায়কও বিধানসভায় আসতে পারবেন না ।" শুভেন্দুর আজকের লক্ষ্য ছিলেন মূলত মুর্শিদাবাদের বড়ঞাঁর বিধায়ক প্রতিমা রজক । একইসঙ্গে বহরমপুরের বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তীও যে তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন তা একপ্রকার নিশ্চিত । শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পরই তাঁর দিকে রণংদেহী মূর্তিতে তেড়ে যান মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ চট্টোপাধ্যায় । তাঁর বক্তব্য, "একজন মন্ত্রী হয়ে শুভেন্দুবাবু কিভাবে এই কথা বলতে পারেন?" যদিও শুভেন্দু দাবি করতে থাকেন, ক্ষমা চাইতে হবে প্রতিমাদের । ওলেলে নেমে বিক্ষোভ দেখান বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীকেও ।
এরপরই মুহূর্তে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে যায় । হাতাহাতির মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় শাসক ও কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন বিধায়কের মধ্যে । কংগ্রেস বিধায়করা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝে প্রথমে আসরে নামেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসরা । কিন্তু তাতেও কোনও কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত দু'পক্ষের বিবাদ থামাতে হস্তক্ষেপ করতে হয় স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই । মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে । অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অনুরোধ করেন সবাইকে শান্ত হতে । শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ।