কলকাতা, 25 মে: গরু পাচার থেকে কয়লা পাচারকাণ্ড । শুধু যে এই অনৈতিক কাজে রাজ্য রাজনীতির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যুক্ত রয়েছে তেমনটা নয়, বরং যুক্ত রয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ একাধিক আধিকারিকও । এবার গরু পাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে এসেছে সেরকমই বিস্ফোরক তথ্য । জানা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দীর্ঘদিন কর্মরত শুল্ক দফতরের দুই আধিকারিক নিজের প্রভাব খাটিয়ে বয়স্ক এবং রোগাগ্রস্ত গরুকে জোর করে বেশি দাম দিয়ে পদ্মাপাড়ে পাচার করতে বাধ্য করত ।
পাচারকাণ্ডের তদন্তে নেমে আসানসোল, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর ও মুর্শিদাবাদে বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে একাধিক গরু পাচারকারীদের সঙ্গে কথা বলে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা এই তথ্য জানতে পেরেছেন ৷ তাঁরা জানতে পেরেছেন, মূলত এই শুল্ক দফতরের দুই আধিকারিক সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন গরু পাচারকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে । যেহেতু শুল্ক দফতরে এই দুই আধিকারিক নির্দেশ চূড়ান্ত ছিল এবং তাঁরা ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি ৷ তাই তাঁদের বিভিন্ন সময়ে অনেকরকম অনুরোধ রাখতে বাধ্য হত ইন্ডাস্ট্রির মালিক গরু পাচারকাণ্ডে বর্তমানে তিহাড় জেলে বন্দি এনামুল ।
এরপর এনামুল হকের তরফ থেকে সেই জীর্ণ রোগাগ্রস্ত গরুগুলিকে চড়া দামে বাংলাদেশে পাচার করার জন্য বিভিন্ন স্থানীয় গরু পাচারকারীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হত । শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময়ে এই দুই আধিকারিক গরু পাচারকারীদের কাছ থেকে গরুর মাথাপিছু 500 টাকা থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন নিতেন বলে জানা গিয়েছে । ইতিমধ্যেই সিবিআই 2018 সাল থেকে 2022 সাল পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিশেষ করে মুর্শিদাবাদের শুল্ক দফতরের দায়িত্বে থাকা একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছে ।
সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহের মধ্যে ফের দুটি শুল্ক দফতরের আধিকারিককে সিবিআই দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন তদন্তকারীরা । ইতিমধ্যেই কয়লা পাচারকাণ্ডেরও তদন্তে নেমে ইসিএলের এক কর্তা এবং সিআইএসএফের একজন ইন্সপেক্টরকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই । ফলে মনে করা হচ্ছে কয়লা থেকে গরু পাচারকাণ্ডে রাজনৈতিক প্রভাবশালী এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরাসরিভাবে যুক্ত রয়েছে একাধিক কেন্দ্রীয় দফতরের আধিকারিকরাও ।
আরও পড়ুন: এনামুলের নজর ছিল বোল্ডারে, সিবিআইয়ের হাতে বেশ কয়েকজন বিএসএফ কর্মীর নাম