কলকাতা 5 জুন : পরীক্ষামূলকভাবে কাজকর্ম শুরু হওয়ার কথা 11 জুন থেকে, আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এরই মধ্যে সামনে এল আলিপুর আদালতের দুই বিচারকের কোরোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর ৷ যার জেরে ভীত কোর্টের কর্মীরা ৷ তাদের একাংশের দাবি, পিছিয়ে দেওয়া হোক কোর্ট খোলার দিন ৷ ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে একটি চিঠি দেওয়া হয় ৷ এতে হাইকোর্টের কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবে শুরু করার আগে পরিস্থিতি ভালো করে খতিয়ে দেখার আর্জি জানানো হয়েছে। কারণ এই পরিস্থিতিতে সমস্ত কর্মচারীরাই ভয়ের মধ্যে রয়েছেন বলে ওই চিঠিতে লেখা হয়েছে ।
যদি 11 তারিখ থেকে কোর্টের স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয় তাহলে রূপরেখা কেমন হবে তাও জানিয়েছে হাইকোর্ট ৷ বলা হয়েছে শুনানি হবে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে । আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, 2 টি ডিভিশন বেঞ্চ, 3 টি সিঙ্গল বেঞ্চ ও প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলবে আদালত কক্ষেই । যথাক্রমে 11 ,15, 17 ও 19 জুন শুধুমাত্র জরুরিভিত্তিক মামলাগুলির শুনানির জন্য বসবে আদালত । তবে, জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমেই চলবে প্রতিদিন । মাত্র 8 জন আইনজীবী মামলাকারীর উপস্থিতিতেই এই শুনানি চলবে । যেক্ষেত্রে 8 জনের বেশী আইনজীবীর উপস্থিতি প্রয়োজন মনে করা হবে সেসব মামলার শুনানি স্থগিত থাকবে । আদালত চত্বরে শুধুমাত্র জরুরি দরকার যাদের, তাঁরাই হাজির হতে পারবেন ৷ তাঁদের গাড়ি পার্কিং করতে পারবেন ৷ যাঁদের কোনও প্রয়োজন নেই, তাঁরা আদালত চত্বরে থাকতে পারবেন না । আদালতের সমস্ত লিফট সচল থাকবে কিন্তু 3 জনের বেশি লিফটে যাতায়াত করতে পারবেন না । সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে যদি কোনও ফাঁক রয়েছে বলে মনে করেন তবে অবিলম্বে আদালতকক্ষে শুনানি বন্ধ করে দিতে পারেন প্রধান বিচারপতি ।
হাইকোর্টের তরফে আরও জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র যে সমস্ত আইনজীবীদের মামলা থাকবে তারাই আদালতকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন । 9 জুন থেকে জামিন সংক্রান্ত মামলা ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানি করা হবে । আদালত চত্বরে উপস্থিত প্রত্যেকের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক, সঙ্গে রাখতে হবে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার । সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে । এক সপ্তাহ পরে এই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে । বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানিয়েছেন , আদালতের কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত সব পক্ষের দাবিতেই আদালতকক্ষে পরীক্ষামূলকভাবে শুনানির কাজকর্ম শুরু করা হচ্ছে । কিন্তু প্রধান বিচারপতি যদি মনে করেন স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোথাও ফাঁক থাকছে তাহলে তিনি বিনা নোটিশে আদালতের কাজকর্ম বন্ধ করে দিতে পারেন ।
আদালতের কাজকর্ম শুরু করার ব্যাপারে রাজ্যের তরফেও আদালতের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল । কিন্তু গণপরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক না থাকায় শুরু করা যাচ্ছিল না আদালতের কাজ । তাই রাজ্যের তরফে হাইকোর্টকে গতকালই জানানো হয় দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিশেষ বিশেষ দিনগুলিতে বাসের ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার ৷ তবে, শুধুমাত্র হাইকোর্টের কর্মী অফিসারদেরকে আনার জন্য 15টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে । প্রসঙ্গত, COVID-19 প্যানডেমিকের কারণে গত 16 মার্চ থেকেই কলকাতা হাইকোর্ট-সহ রাজ্যের সমস্ত আদালতের কাজকর্ম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । ফের আস্তে আস্তে শুরু হতে চলেছে আদালতের কাজ ।