কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর: কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল পুলিশকে ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি-2 পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের সময় বোমাবাজির ঘটনা নিয়ে পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত । তাঁর প্রশ্ন, ‘‘পুলিশ আইন সম্পর্কে জানেন না অথবা পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে !’’ পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ তাছাড়া মামলায় যুক্ত করা হয়েছে সাংসদ শিশির অধিকারীকেও ।
উল্লেখ্য, গত 4 সেপ্টেম্বর আদালত নির্দেশ দিয়েছিল যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে । এবং বিরোধী দলের বিজয়ী প্রার্থীদের পুলিশ প্রহরায় নিয়ে যাবে বিডিও অফিসে । 5 সেপ্টেম্বর বোর্ড গঠনের সময় লাঠি, বোমা, বন্দুক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে । যেখানে বিডিও আক্রান্ত হয়েছেন । এফআইআর দায়ের করা হয়েছে । বিস্ফোরণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে ৷
তাছাড়া এই ঘটনায় আরও দু’টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । একটি অভিযোগ খুকুমণি মণ্ডল বিজেপির জয়ী প্রার্থী দায়ের করেছেন । দ্বিতীয় অভিযোগ দায়ের করেছেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী । অভিযোগ, তবে সঠিক আইনে মামলা দায়ের করেনি পুলিশ । খেজুরি থানার ওসি-র উপস্থিতিতে পুরো ঘটনা ঘটেছিল ৷
বিচারপতির জানতে চান, "পুলিশ কী করছিল ? আপনার আধিকারিকদের জিজ্ঞাসা করুন বোমাবাজি হয়েছিল কি না ? যদি হয়ে থাকে তাহলে কি বিস্ফোরণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে ? এফআইআর কি পুলিশ নিজে থেকে করেছিল ? পুলিশ আইন সম্পর্কে জানেন না অথবা পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে ! দুশোর মতো পুলিশ যদি বোর্ড গঠনের সময় উপস্থিত থাকেন, তাহলে সেই ঘটনা ঘটতো না ।"
রাজ্যের তরফে জানানো হয়, "শিশির অধিকারীর গাড়িতে বোমা মারার অভিযোগ সঠিক নয়, কারণ যেখানে বোর্ড গঠন করা হচ্ছিল, সেখান থেকে 9 কিলোমিটার দূরে হয়েছে ।" শিশির অধিকারীর আইনজীবীর বক্তব্য, "সাংসদ প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করছেন । পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি । গাড়িতে ক্ষতি হয়েছে । কেন্দ্রীয় বাহিনী শিশির অধিকারীকে ওই জায়গা থেকে উদ্ধার করে ৷’’
কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী বলেন, "বোমা বিস্ফোরণে ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে এনআইএ আইন যুক্ত করা হয়নি । আর সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে জানাচ্ছে, ওগুলো চকলেট বোমা ছিল । আসলে তা নয় ৷’’
আরও পড়ুন: শিশির অধিকারীর কনভয়ে হামলা, প্রাথমিক চিকিৎসার ছাড়া পেলেন আহত তৃণমূল সাংসদ
শেষে বিচারপতি নির্দেশে জানিয়েছেন, ঘটনা পুলিশের আয়ত্তের বাইরে চলে গেলেও তারা সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি । তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । একটি পঞ্চায়েত প্রার্থী এবং একটি সাংসদ শিশির অধিকারীর তরফে । এই নিয়ে তৃতীয়বার আদালতে মামলা দায়ের করেন সাংসদ শিশির অধিকারী । পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাবে । পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের তত্বাবধানে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে । যে তিনটে এফআইআর হয়েছে এসপি নিজে তদন্ত করবে । আদালতের আরও নির্দেশ, বোর্ডের পরর্বতী দিনে কেন্দ্রের কাছে সিআরপিএফ চাইতে হবে নিরাপত্তার জন্য ।