কলকাতা, 31 অগস্ট: ফের এক নাবালিকার গর্ভপাতের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট । ষষ্ঠ শ্রেণীর ওই ছাত্রী 34 বছর বয়সি এক ব্যাক্তির যৌন লালসার স্বীকার বলে অভিযোগ । তার জেরেই মাত্র 13 বছর বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে সে । আপাতত পূর্ব মেদিনীপুরের একটি হোমে রয়েছে মেয়েটি । অবিলম্বে মেয়েটিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে আনার জন্য বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ দিয়েছেন । আদালত জানিয়েছে, হাসপাতাল মেয়েটির পরীক্ষার জন্য একটা বিশেষ দল তৈরি করবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদেরকে নিয়ে । তাঁরা যদি মনে করেন ওই মেয়েটির গর্ভপাত করা সম্ভব, তাহলে তাঁকে 24 ঘণ্টার মধ্যে গর্ভপাত করাতে হবে ।
কিশোরীর বাবা-মা পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন ৷ থাকেন অসমে । বাড়িতে থাকে সে ও তার ছোট বোন । অভিযোগ, এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি তাকে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে । লোকজনের ভয়ে সে কাউকে কিছু বলতে পারেনি । কিন্তু ধীরে ধীরে তার গর্ভধারণের ছবি ফুটে উঠতে থাকে ৷
গত 12 অগস্ট দিঘা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । চিকিৎসক জানান যে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা৷ হাসপাতালই থানায় অভিযোগ দায়ের করে । পরে পুলিশ তাকে পূর্ব মেদিনীপুরের শিশু কল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দেওয়া হয় । তারা একাধিক মেডিক্যাল পরীক্ষার পর জানতে পারে বর্তমানে মেয়েটি প্রায় 26 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা । বাধ্য হয়ে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে গর্ভপাতের অনুমতির জন্য ।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনা । মাত্র 13 বছর বয়সের মেয়ে । তার বাবা-মা পর্যন্ত এই ঘটনার বিষয়ে জানে না । মেয়েটি যে মানসিক অস্থিরতা ও ভয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাকে যেন এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন থেকে অন্যান্য কর্তৃপক্ষ সব ধরনের সহযোগিতা করে ।
এসএসকেএম হাসপাতালকে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে মেয়েটির গর্ভপাত করাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । যাতে তার কোনোরকম শারীরিক সমস্যা যেন না হয় । পাশাপাশি সম্পূর্ণ সুস্থ করার পরই যেন তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয় । একই সঙ্গে এই মুহূর্তে বাড়িতে তার একমাত্র ছোট বোন রয়েছে । তার যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখার নির্দেশ বিচারপতি দিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর চাইল্ড কেয়ারকে । পাশাপাশি মেয়েটির এই কঠিন সময়ে যেন শিশু কল্যাণ সমিতি সব সময় নজর রাখে সেই নির্দেশও দিয়েছে আদালত ।
আরও পড়ুন: 11 বছরের মেয়ে 24 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা, গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টে পরিবার