কলকাতা, 5 এপ্রিল: রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তির যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য আগামিকাল হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে রাজ্যের সমস্ত মিছিলে রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই নির্দেশ দিয়েছে ৷
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, পুলিশ মিছিলে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেবে । পাশাপাশি যে কোনও ঝামেলা আটকাতে মিছিলের রাস্তা সংক্ষিপ্ত করে দেবে । রাস্তায় সিসিটিভি লাগানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । পুলিশ ভলানটিয়ারদের ভুমিকাও নির্দিষ্ট করে দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত । এ ছাড়াও বিচারপতি বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, জনপ্রতিনিধিরা এমন কিছু মন্তব্য করবেন না যাতে পরিস্থিতি খারাপ হয় ।
রামনবমীর মিছিলের পর হনুমান জয়ন্তীতে নতুন করে যাতে উত্তেজনা না ছড়ায় তা সুনিশ্চিত করতে আবেদন জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । সেই মামলার শুনানিতে বুধবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে মিছিল করার জন্য 2 হাজার আবেদন এসেছে রাজ্যের কাছে ৷ হনুমান জয়ন্তীর জন্য রাজ্য কিছু নতুন পদক্ষেপ করেছে ৷ যাঁরা মিছিল করবে সেই ব্যক্তি ও সংগঠনকে ডিক্লেয়ারেশন দিতে হবে যে, তাঁরা কোনও রকম শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে না । কতজন থাকবেন মিছিলে সেটাও জানাতে হবে, যাতে পুলিশ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে ।
মিছিল কখন কোথায় শুরু হচ্ছে, কখন কোথায় শেষ করা হবে তা আগাম জানাতে হবে । অত্যন্ত স্পর্শকাতর এলাকাতে ব্যারিকেড করার কথা বলা হয়েছে । হনুমান জয়ন্তীতে কয়েকশো লোকের মিছিল হয় । মিছিলে ভলানটিয়াররা থাকবে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য । মিছিলের রাস্তায় বিশেষ বিশেষ জায়গায় সিসিটিভি লাগানোর কথাও ভাবা হয়েছে বলে জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল ।
অ্যাডভোকেট জেনারেল এ দিন আদালতে বলেন, রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীতে মিছিল আগে এ রাজ্যে খুব একটা হত না । শেষ পাঁচ বছরে দেখা যাচ্ছে এই উপলক্ষে মিছিলের সংখ্যা বেড়েছে । বহু অচেনা ধর্মীয় সংগঠন এই মিছিল করছে । মিছিলের 15 দিন আগে তারা যাতে পুলিশকে জানায় আদালত সেই নির্দেশ দিক ।
তাতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, "রামনবমীর পরিস্থিতির পর সাধারণ মানুষকে কীভাবে আশ্বস্ত করা হবে যে কিছু হবে না । আমরা আছি !" আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের অভিযোগ, " রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কখনও এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন ? অবিলম্বে আদালত এ সব বন্ধ করার নির্দেশ দিক ।"
আরও পড়ুন: রামনবমীর অশান্তির পর হনুমান জয়ন্তীতে তৎপরতা, একাধিক নির্দেশিকা জারি লালবাজারের