কলকাতা, 8 অগস্ট: অন্যায়ভাবে বেসরকারি সংস্থাকে ভারতীয় রেলের কোটি কোটি টাকা পাইয়ে দিয়েছে রেলেরই কিছু আধিকারিক । এই অভিযোগ শুনে বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর ববি শরফ । এই ধরনের অভিযোগ শুনে এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি ৷ তিনি জানান, সাধারণ মানুষের সেবক যারা তাদের এই আচরণ চলতে থাকলে আদালত চুপ করে বসে থাকবে না ৷ মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রককে এই বিষয়ে সিবিআইয়ের সহযোগিতা নিয়ে অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ৷
অভিযোগ, রেশমি মেটালিক্স নামে এক সংস্থার সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একটা চুক্তি হয় ওয়াগন-সহ অন্যান্য রেলের সরঞ্জাম তৈরিতে । যেখানে দেখা যায় রেলের কিছু আধিকারিক অন্যায় ভাবে প্রায় 1 হাজার 300 কোটি টাকা বেয়াইনি ভাবে পাইয়ে দিয়েছে ওই সংস্থাকে । এর বিরুদ্ধে ভারতীয় রেলই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে । এদিন হাইকোর্ট 2021 সালের 10 মে রেলের তরফে যে বরাত দেওয়া হয়েছিল তার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে । বিচারপতি শেখর ববি শরাফ ওই বরাত দেওয়ার উপর আপাতত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন ।
পাশাপাশি, দেশের অর্থমন্ত্রককে বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন তারা সিবিআইয়ের সহযোগিতায় একটা হাই পাওয়ার কমিটি গঠন করে এই বিষয়ে তদন্ত করে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিক । বিচারপতি এদিন উল্লেখ করেন, ভারতীয় রেল শুধু যাত্রীবহন করে পৌঁছে দেয়না, কোটি কোটি মানুষের আশা-স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত দেশের রেল পরিষেবা । রেল যে ভাবে কোনো সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিয়েছে তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর ববি শরফ ।
আরও পড়ুন: ভাঙড়ে তৃণমূলের হেরে যাওয়া প্রার্থীকে বোর্ড গঠনের বৈঠকে ডাক, আদালতে ভুল স্বীকার রাজ্যের
বিচারপতি হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন অবিলম্বে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলকে এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল করতে, যাতে তিনি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রককে এই বিষয়টি জানান । বিচারপতি শেষে উল্লেখ করেছেন, সংবিধানের রক্ষক হিসাবে প্রয়োজনের সময় আদালতের সরব হয়ে ওঠা জরুরি । এই ঘটনায় জনগণের সেবক যারা, তারা যেভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিযোগ উঠছে তা শুধু আইনি অপরাধ নয়, একই সঙ্গে নৈতিক অপরাধ ও বটে ৷ যা ভারতীয় সংবিধানের যে স্পিরিট ও আত্মা তার সঙ্গে বৈরিতা পূর্ণ। জনসেবক নিজের স্বার্থের থেকেও জনস্বার্থের দিকে নজর দেবে সেটাই কাম্য । কিন্তু এখানে জানলা দিয়ে সেই নীতিকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে । সেই জন্যই আদালতে দায়িত্ব সাধারণ মানুষের স্বার্থে সংবিধানের রক্ষাকর্তা হিসাবে সরব হয়ে ওঠা ।