কলকাতা, 6 ফেব্রুয়ারি: আইআইটি খড়গপুরের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর (IIT Kharagpur Student Death Case) ঘটনায় আগামী 20 ফেব্রুয়ারি পুলিশকে ফাইনাল রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) । সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এদিন এই নির্দেশ দিয়েছেন । এদিন শুনানিতে পুলিশকে বিচারপতির মৃদু ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় ৷ কীভাবে মারা গেল ওই ছাত্র তা এখনও খুঁজে বের করতে না পারায়, পুলিশকে এদিন বিচারপতির মৃদু ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় ৷ এর পরই পুলিশি রিপোর্টের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেন বিচারপতি ।
এদিন শুনানিতে মৃতের পরিবারের তরফে আইনজীবী রণজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ময়নাতদন্ত রিপোর্ট বলছে যে ব্লেড বা ওই জাতীয় কিছু ব্যবহার করার ফলে প্রচুর রক্তপাত হয়েছে । আবার হেভি মেডিসিন ব্যবহারের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে । চার মাস হয়ে গিয়েছে । সিট গঠন করা হোক । অর্জুন শর্মা ও রাজেন্দ্র প্রসাদ নামে দু’জন ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে । সাক্ষী বিভ্রান্তিমূলক কথা বলছে ৷ মৃত্যুর সময় মোবাইল ফোন মোবাইল বন্ধ ছিল ।’’
বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘‘মাদকের ওভারডোজ হয়ে গিয়েছিল বলে মনে হয় ?’’ মৃতের পরিবারের আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘60 ঘণ্টা দেহ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল ।’’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খড়গপুর রানা মুখোপাধ্যায় বলেন," ময়নাতদন্ত রিপোর্টে কোনও খুনের সন্দেহ নেই । তাঁর ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল । হয়তো উপরের লক তোলা ছিল । ঠেলা দিতেই খুলে গিয়েছে হতে পারে । ফেসবুক থেকে একটা পোস্ট ডিলিট করা হয়েছে । সেটা থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট, ফেব্রুয়ারিতে ফাইজান র্যাগিং-এর স্বীকার হয় । মানসিক চাপে ছিলেন । যদিও র্যাগিং-এর সঙ্গে এই মৃত্যুর কোনও যোগ পুলিশ এখনও পায়নি । সেক্ষেত্রে প্যানিক অ্যাটাকে মারা যেতে পারে ।’’
বিচারপতি পুলিশের কাছে জানতে চান, ‘‘কী করে মারা গেল মনে হচ্ছে ? বাইরে থেকে আঘাতের চিন্হ ছিল ?’’ পুলিশের কাছে খুনের রহস্য যদিও এখনও অধরা । তাদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয় বিষয়টি । পাশাপাশি আইআইটি খড়গপুর কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা না দেখে পুলিশ ফাইনাল রিপোর্ট দিতে চাইছে না বলে উল্লেখ করা হয় । ছাত্রের পরিবারের তরফে আইনজীবী আবারও বলেন, "আইআইটি কাউন্সিলরদের রিপোর্ট বলছে, আত্মহত্যা করতে পারে না । 11 তারিখেও তার চোখে মুখে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস দেখা গিয়েছে ।"
তারপরই বিচারপতি পুলিশকে রীতিমতো ধমকের সুরে বলেন, "পুলিশ কেন এত ধীরে চলছে ? আইআইটি তার মতো রিপোর্ট দেবে । তার দিকে তাকিয়ে থাকবে কেন পুলিশ ? পুলিশ জানে না কাকে ডাকতে হবে বা কার সাক্ষ্য নিতে হবে ? কোর্ট তদন্ত শেখাচ্ছে না । ওটা পুলিশের কাজ । কিন্তু কোনও দিক ছাড়া যাবে না । এটা মাথায় রাখা জরুরি । 20 ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফাইনাল রিপোর্ট দিতে হবে পুলিশকে ।"
আরও পড়ুন: খড়গপুর আইআইটি-র ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় কলেজ অধিকর্তাকে হাজিরার নির্দেশ হাইকোর্টের