কলকাতা, 2 জুলাই : ভোট পরবর্তী হিংসার মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নেতৃত্বাধীন কমিটির মেয়াদ বাড়াল কলকাতা হাইকোর্ট । একইসঙ্গে একাধিক নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ । মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট ৷ প্রয়োজনে আক্রান্তদের গোপন জবানবন্দি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ।
আজ মামলার শুনানিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তরফে আরও সময় চাওয়া হয় । তাদের তরফে বলা হয়, যে সমস্ত অভিযোগ তাদের কাছে এসেছে তা খতিয়ে দেখতে আরও সময় প্রয়োজন । রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা এখনও পরিদর্শন করা হয়নি । এরপরই কলকাতা হাইকোর্ট আপাতত 13 জুলাই পর্যন্ত কমিশনকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ।
এদিকে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় পুলিশের কাছে যত অভিযোগ এসেছে সবগুলির এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে সব আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও তাদের রেশনের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত । কারও রেশন কার্ড হারিয়ে গেলে অবিলম্বে রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এছাড়া কলকাতার আলিপুর কমান্ডো হাসপাতলে বেলেঘাটার বিজেপি নেতা অভিজিৎ সরকারের দেহের দ্বিতীয় ময়না তদন্ত করতে হবে ।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা যাদবপুর এলাকায় পরিদর্শনে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন । সেই ঘটনায় ডিসিপি সাউথ সাবার্বান রশিদ মুনির খানকে শোকজ নোটিশ ইস্যু করেছে আদালত । তাঁর বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার রুল জারি করা হবে না, জানাতে হবে ডিসিপিকে । একইসঙ্গে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনায় প্রয়োজনীয় সমস্ত নথিপত্র সংরক্ষণ করতে । 13 জুলাই ফের শুনানি এই মামলার ।
আরও পড়ুন : "ঘাবড়াবেন না মোহনবাবু, ও ভ্যাকসিনে বিষ নাই !" মগনলাল মেঘরাজকে নিয়ে আসরে বাবুল
ভোট পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে 18 জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট । পাশাপাশি কমিটিকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে । রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে হাইকোর্টে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। নির্দেশে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের পরিস্থিতি ঘুরে দেখে মানবাধিকার কমিশন রিপোর্ট দেবে আদালতকে । এই ব্যাপারে রাজ্য সহযোগিতা করবে । না হলে আদালত অবমাননার দায় নিতে হবে রাজ্যকে ৷ এই বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ।
এরপরই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত মানুষদের খোঁজে ঘুরেছেন ৷ তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ৷ তার পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হয়েছিল রিপোর্ট । সেই গোপন রিপোর্ট 29 জুন কলকাতা হাইকোর্টে জমা করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ৷