কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর: পঞ্চায়েত ভোটে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে কয়েকশো মামলা দায়ের করেছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি । মামলার চাপের কারণে বাধ্য হয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহা শনিবার মামলা শোনার সিদ্ধান্ত নেন । কিন্তু বলা যায়, শেষ পর্যন্ত হতাশ হতে হল বিরোধীদের । এ দিন এজলাসে বসে একের পর এক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন বিচারপতি । সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পর তেমন কিছু না পাওয়ায় সেসব মামলা খারিজ করে দিয়েছেন তিনি ।
তবে বেশ কয়েকটি মামলাতে নির্বাচন কমিশনের রিপোর্টও তলব করেছেন বিচারপতি সিনহা । বালি জগাছা ব্যালট পেপার ছিনতাই মামলায়ও কাউন্টিং-এর দিনের ভিডিয়ো ফুটেজ দেখেন বিচারপতি । তারপর নির্দেশে জানান, পুনর্নির্বাচনের দাবির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না আদালত । মামলাকারীর আর্জি খারিজ করে দেন তিনি । পাশাপাশি পুলিশকে ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা ।
বিচারপতি ফুটেজ দেখে বলেন, "ভিডিয়ো দেখে মনে হচ্ছে, কিছু একটা তো ঘটেছেই । কিন্তু তা পরিষ্কার নয় ।" অন্য আর একটা মামলায়, গত 11 জুলাই হুগলি জেলায় সিঙ্গুর নেতাজি জয়ন্তী পাঠাগারে পঞ্চায়েত নির্বাচনে গণনার দিনের সিসিটিভি ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখেন বিচারপতি সিনহা । সেখানে দেখা যায়, পায়রার খোপ দিয়ে হাত ঢুকিয়ে ব্যালট পেপার চুরি করা হয়েছে । সেই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল ৷
শনিবার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, "ব্যালট পেপার চুরি হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে । যে ব্যালট পেপার পাওয়া গিয়েছে সেগুলি গণনার ক্ষেত্রে অযোগ্য । 42টি ব্যালট পেপার মিসিং ছিল, তা উল্লেখ করা হয়েছিল । যার কারণে দ্বিতীয় দফায় গণনা চলাকালীন দু'জন প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ধরা পরে ।" এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে একটা রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন । আগামী 27 সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি ।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত মামলায় সব ফুটেজ দেখবেন বিচারপতি, শনিবার দিন ধার্য করলেন
আর একটি মামলায়, হাবড়া ব্লকের বেরাবেরি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিসিটিভি ফুটেজ দেখার জন্য মামলাকারি প্রার্থীদের আইনজীবীকে অনুমতি দিয়েছে আদালত । গণনার দিনে ব্যালট লুটের অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হন হাবড়া ব্লকের বেরাবেরি গ্রাম পঞ্চায়েতের রাষ্ট্রীয় সেকুলার মজলিস পার্টির চারজন প্রার্থী । অশোক নগর বয়েজ স্কুলে গণনার দিন ব্যালট লুট এবং ব্যালট পেপার চিবিয়ে খেয়ে ফেলার অভিযোগ ওঠে । এজেন্টদের ব্যাপক মারধরের অভিযোগও ছিল । এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি সিনহা । আগামী 15 সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি ।