কলকাতা, 14 জুলাই: টাকার বিনিময়ে বা ঘুষ দিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে, তাদের নামের তালিকা দ্রুত জমা দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের । সিবিআইকে এই তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা । শুক্রবার তিনি ইডি ও সিবিআইকে নির্দেশ দেন 29 অগস্টের মধ্যে তালিকা জমা দিতে হবে ৷ সিবিআই তদন্তের উপর তিনি যে অসন্তুষ্ট, তাও এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি ।
2016 সালের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টে শুক্রবার রিপোর্ট পেশ করে সিবিআই । যে রিপোর্ট দেখে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি অমৃতা সিনহা । তিনি বলেন, "যে শিক্ষকরা টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন তাদের খুঁজে বের করতে হবে অবিলম্বে। যাতে যোগ্যরা চাকরি পান সেই ব্যবস্থা করতে হবে। " প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় চাকরি পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অর্থাৎ মোট ৪২, ৯৪২ জন শিক্ষকের একটা অংশ টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ । সেই নামের তালিকা সিবিআইকে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা ।
শুক্রবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিইয়ের তদন্তের অগ্রগতিতে অসন্তুষ্ট হন বিচারপতি সিনহা । এদিন, এই মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠিকে সামনে রেখেই একটি রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই । যে রিপোর্টের বিরোধিতা করেই মামলাকরীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত বলেন, "42 হাজারের বেশি নিয়োগ করা হয়েছে । কে বা কারা সুবিধা পেয়েছেন এখনও তা স্পষ্ট হয়নি । সিবিআইকে সেটা খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেওয়া হোক। এখনও পর্যন্ত সিবিআই সেটা করতে পারেনি।" জানা গিয়েছে, সিবিআই তদন্ত 'ধীর গতি'-তে হচ্ছে বলেও জানান বিচারপতি অমৃতা সিনহা ৷
আদালত সূত্রের খবর, ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এদিনি সিবিআই অয়ন শীল, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির হিসেব আদালতে পেশ করে । যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে মোট 350 কোটি টাকা বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করা হয়েছে। দুর্নীতির টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, টলিউডেও এই টাকা কাজে লাগানো হয় । মোট 100 টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট গোয়েন্দাদের নজরে আছে । সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের সঙ্গেও আর্থিক লেনদেনের যোগ পাওয়া গেছে । সিবিআই রিপোর্ট পেশ করার পরই সুদীপ্ত দাশগুপ্ত হলফনামা জমা দিয়ে তদন্তের উপর প্রশ্ন তোলেন । রাজ্যের তরফে আইনজীবী শীর্ষাণ্য বন্দ্যোপাধ্যা বলেন, "রাজ্যের ১২৩টি পৌরসভার তথ্য চাওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে । সেখানে একাধিক বিষয় অস্পষ্ট । পৌরসভার ফোন নম্বর চাওয়া হয়েছে, যা পাওয়া যানি ৷ "
এরপরই সিবিআইয়ে তদন্তের সমালোচনা করেই বিচারপতি সিনহা ঘুষ যারা দিয়েছেন তাদের তালিকা দ্রুত পেশ করার নির্দেশ দেন ৷ মামলার আগামী শুনানি 29 অগস্ট । অর্থাৎ, এক মাসের কম সময়ের মধ্যেই সিবিআইকে এই তালিকা পেশ করতে হবে ।