কলকাতা, 28 ফেব্রুয়ারি: সংবিধান অনুয়ায়ী কোনও দোষী ব্যক্তিরও মৌলিক অধিকার আছে । জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস (Jnaneswari Accident Case) দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত 11 জনের জামিন মঞ্জুর করার কারণ হিসেবে এই যুক্তিকেই মান্যতা দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। দীর্ঘ এক দশক হয়ে যাওয়ার পরও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়াই সম্পন্ন করতে না পারায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে মৃদু ভর্ৎসনাও করেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সাব্বার রাশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ।
মঙ্গলবার জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত 11 জনকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল কলকাতা হাইকোর্ট । 14 বছর আগের ঘটনায় কেন এখনও বিচার শেষ হয়নি, কেন সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করা যায়নি ? এই প্রশ্ন করে সিবিআইকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ আদালতের পর্যবেক্ষণ, "ভুলে যাবেন না অভিযুক্তদেরও মৌলিক অধিকার রয়েছে ৷ বিনা বিচারে ওই ভাবে তাঁদের আটকে রাখা যায় না । 10 বছরের বেশি তাঁরা জেল খাটছেন ।" এর পরেই 11 জন অভিযুক্তকে জামিন দেয় হাইকোর্ট ।
প্রসঙ্গত, এই মামলায় অন্য আরও বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে এ মাসের শুরুতে জামিন দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এ দিন যাঁরা জামিন পেলেন তাঁরা হলেন, ভোলানাথ মাহাত, রাম মুদি, অমিয় মাহাত, মহন্ত মাহাত, সুনীল মাহাত, মনোজ মাহাত, লক্ষ্মীকান্ত রায়, জয়দেব মাহাত, মানিক মাহাত, জলধর মাহাত ও খগেন মাহাত ৷
আরও পড়ুন: গণধর্ষণের অভিযোগে 10 দিন পরেও কেন নেওয়া হয়নি গোপন জবানবন্দি ? ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
2010 সালের 27মে রাতে ঝাড়গ্রামের সরডিহার রাজাবাঁধ এলাকায় লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় হাওড়া থেকে মুম্বইগামী আপ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস । সেই সময়ে ডাউন লাইনে উলটোদিক থেকে আসা একটি মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে ট্রেনটির । মৃত্যু হয় জ্ঞানেশ্বরীর 148 জন যাত্রীর । শতাধিক যাত্রী আহত হন । মালগাড়ির চালকেরও মৃত্যু হয় ৷ মাওবাদীদের মদতে জনসাধারণের কমিটির লোকজন আপ লাইনের প্যানড্রোল ক্লিপ ও ফিসপ্লেট খুলে দেওয়ায় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ ওঠে ।
চালকের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিশ । পরে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে । গ্রেফতার হন 20 জন । কিন্তু এখনও পর্যন্ত সমস্ত সাক্ষীর সাক্ষ্য নিতে পারেনি মেদিনীপুর নিম্ন আদালত । এর আগে হাইকোর্ট বেশ কয়েকজনের জামিন মঞ্জুর করেছিল ঠিক একই যুক্তিতে ।