কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর : রাজীব কুমারের আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ এর ফলে তাঁর আর সুরক্ষাকবচ রইল না ৷ তাঁকে CBI-র সঙ্গে সবরকম সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ তবে উপযুক্ত কারণ ছাড়া কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট ৷ CBI তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যে সমন পাঠিয়েছিল তাতে সুরক্ষা চেয়ে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন রাজীব কুমার । সেই আবেদনও খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট । হাইকোর্টের বক্তব্য, এই মুহূর্তে তাঁকে সুরক্ষা দেওয়া মানে তদন্ত বিঘ্নিত হতে পারে । পাশাপাশি বিচারপতি মধুমতী মিত্রর মন্তব্য, "সারদা চিটফান্ড কান্ডকে কেন্দ্র করে গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে ।"
11 সেপ্টেম্বর রাজীব কুমারকে CBI-এর সমন পাঠানো সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষ হয় হাইকোর্টে । 17 জুলাই বিচারপতি মধুমতী মিত্রর সিঙ্গল বেঞ্চে শুরু হয়েছিল এই শুনানি । 11 সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের বক্তব্য শেষে বিচারপতি মধুমতী মিত্র এই মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন ।
এর আগে রাজীব কুমারের আবেদনের ভিত্তিতে 30 মে হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে বিচারপতি প্রতীক প্রকাশ ব্যানার্জি নির্দেশ দেন, আগামী একমাস অথবা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না CBI । তবে সারদা চিটফান্ড মামলার তদন্তে CBI-এর সঙ্গে রাজীব কুমারকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে । হাইকোর্ট আরও জানায়, ইতিমধ্যে তিনি কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন না । পাসপোর্ট CBI অফিসে জমা রাখতে হবে । প্রতিদিন CBI অফিসারের সামনে হাজিরা দিতে হবে ৷ কলকাতার একটি স্থায়ী ঠিকানায় থাকতে হবে । সেই ঠিকানা CBI -কে জানাতে হবে । CBI-এর একজন অফিসার প্রতিদিন বিকেলে তাঁর বাড়িতে গিয়ে হাজিরা নিয়ে আসবেন ।
এই মামলার শুনানি শুরু হয় 17 জুলাই । প্রথম দিনের শুনানি থেকেই রাজীব কুমারকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে CBI, একথা বলে তোপ দাগেন রাজীব কুমারের আইনজীবী । দীর্ঘ শুনানিতে তিনি বার বার বলার চেষ্টা করেছেন সারদা চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলায় রাজীব কুমার একজন তদন্তকারী অফিসার হিসেবে ছিলেন । কিন্তু, CBI এখন তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করছে ।
রাজীব কুমারের আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেলকে নিজের বাড়িতে একজন বন্দীর মতো জীবন কাটাতে হচ্ছে । এর পালটা CBI-এর তরফের আইনজীবী বলেন, রাজীব কুমার যদি সত্যিই নির্দোষ হন তাহলে পালিয়ে বেড়ানোর প্রয়োজন নেই ৷ CBI জানিয়েছে, রাজীবকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল, কিন্ত তিনি প্রত্যেকবার সময় পিছিয়েছেন ৷ আজ মামলার রায়দানের সময় বিচারপতি মধুমতী মিত্র স্পষ্ট জানান, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় ।