কলকাতা, 26 জুন: চাকরি করতে চান না শিক্ষিকা । দীর্ঘদিন ধরে স্কুলেও যান না তিনি । তা সত্ত্বেও স্কুল কতৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে স্কুলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ হয়নি বলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট । অবিলম্বে ওই শিক্ষিকাকে চাকরি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা ।
2012 সাল থেকে স্কুলে গরহাজির শিক্ষিকা । হাইকোর্ট তাঁকে চাকরি ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পরও তিনি চাকরি ছাড়েননি । এই নিয়ে স্কুলের নিস্ক্রিয় আচরণে ক্ষুব্ধ বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা । সোমবার বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা এই নিয়ে তাঁর নির্দেশে জানান, "একজন শিক্ষিকা 11 বছরের বেশি সময় স্কুলে অনুপস্থিত । তার মানে তিনি চাকরি করতে চান না । তাঁকে পদত্যাগ করতে বলবেন, এইটুকু বলার ক্ষমতা আপনাদের নেই !"
এ ক্ষেত্রে বোর্ড ও স্কুল দুপক্ষই দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে মত বিচারপতির । তিনি বলেন, এতদিন একটা স্কুলে শিক্ষিকা নেই, সেখানে তাঁর জায়গায় অন্য শিক্ষক দেওয়া যেত । কিন্তু বোর্ড আর স্কুলের মধ্যে আইন নিয়ে খেলার জন্য আসল কাজটাই করা হয়নি । দুপক্ষই ক্যালাস, দায়িত্বজ্ঞানহীন ।
এই নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি মান্থা বলেন, "আপনাদের কি কাছের লোক ওই শিক্ষিকা ? প্রধান শিক্ষক ও বোর্ড সভাপতি অন্যের ঘাড়ে দায় চাপানোর খেলায় নেমেছে । দুজনের ক্যালাসনেসের জন্য পড়ুয়ারা নতুন শিক্ষক পায়নি । তাদের ক্ষতি হচ্ছে । আর বোর্ড সভাপতি আমলাতান্ত্রিক আচরণ করছেন । কেন ছাত্রদের 11 বছর ভুগতে হল ? আবার এটাও স্পষ্ট, স্কুল চায় না ওই শিক্ষিকা চাকরি করুন ।"
আরও পড়ুন: সম্পূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনী প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি, জনস্বার্থ মামলা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে
এই কারণে শিক্ষিকা শুক্লা পাঁজা রজককে চাকরি ছাড়তে হবে বলে নির্দেশ দেয় আদালত । বোর্ড সভাপতিকে সতর্ক করে বিচারপতি বলেন, ভবিষ্যতে এমন আচরণ যাতে না করা হয় । সিদ্ধান্ত নিতে বোর্ড সভাপতির অক্ষমতা লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি মান্থা ।
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, পূর্ব মেদিনীপুরের ঘোষপুর শ্রী নেহেরু হাইস্কুলের শিক্ষিকা শুক্লা পাঁজা রজক ৷ 2012 সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি স্কুলে অনুপস্থিত । 2022 সালে ওই শিক্ষিকাকে চাকরি ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট । কিন্তু তিনি চাকরি না ছাড়ায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয় । বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন অবিলম্বে ওই শিক্ষিকাকে চাকরি ছাড়তে হবে ৷ এবং তার পরে তাঁর পাওনা গণ্ডা দ্রুত মেটাতে হবে বোর্ডকে ।