কলকাতা, 19 সেপ্টেম্বর: কুড়মিদের রেল ও রাস্তা রোকো কর্মসূচিকে বেআইনি ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আন্দোলনের নামে রেল ও রাস্তা আটকে জনজীবনকে স্তব্ধ করা বেআইনি বলে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ৷ প্রয়োজনে কুড়মিদের এই কর্মসূচি প্রতিরোধ করতে আজই রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে পারবে বলে জানিয়েছে উচ্চ আদালত ৷
তফসিলি জাতি-উপজাতি এবং অন্যান্য দাবিতে বুধবার থেকে জঙ্গলমহলে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল রোকো কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছিল কুড়মি সমাজ ৷ তার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে পুরুলিয়া চেম্বার অফ কমার্স একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে ৷ সেই মামলার রায়ে, আগামিকাল থেকে শুরু হতে চলা কুড়মিদের জনজীবন স্তব্ধ করে দেওয়ার কর্মসূচিকে বেআইনি ঘোষণা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ‘‘এই রেল ও রাস্তা রোকো বেআইনি ৷ কোনওভাবে আন্দোলনের নামে এইভাবে রেল-রাস্তা বন্ধ করা যাবে না ৷ রাজ্য প্রয়োজনে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখনই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন করতে পারবে ৷ প্রয়োজনে প্রতিবেশী রাজ্য থেকেও এলাকার নিরাপত্তায় বাহিনীর ব্যাপারে সাহায্য নেওয়া যাবে ৷ একই সঙ্গে আরপিএফ ও জিআরপি-কে রেল নিরাপত্তা দেখতে হবে ৷ প্রয়োজনে আরও বাহিনীর ব্যবস্থা রাখতে হবে ওই জেলাগুলির গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ৷ কোনওভাবে নাগরিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা যাবে না ৷’’
আরও পড়ুন: অভিষেকের কনভয়ে হামলা, কুড়মি নেতা কৌশিক মাহাতকে গ্রেফতার করল সিআইডি
আদালত এ দিন মামলার নির্দেশ দিতে গিয়ে পর্যবেক্ষণে জানায়, ‘‘আন্দোলনের নামে রেল ও রাস্তা বন্ধ করলে তাতে শুধু রাজ্যের চার পাঁচটা জেলাই নয় ৷ দুর্ভোগ বাড়ে প্রতিবেশী রাজ্যেও ৷ কোনওভাবে এই নির্দেশ অমান্য করে রেল-রাস্তা বন্ধের চেষ্টা হলে, বা আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোনও সমস্যার তৈরি হলে সামাল দেওয়ার জন্য বাহিনী রাখতে হবে রাজ্যকে ৷’’ তবে, এই সমস্যার চিরতরে সমাধান করতেও রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ বল প্রয়োগ না করে, কীভাবে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় ? সেই চেষ্টা করতে বলা হয়েছে রাজ্যকে ৷
পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম এই আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র ৷ এর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও কুড়মি সম্প্রদায়ের লোকজন নিজেদের স্বতন্ত্র জাতিগোষ্ঠী ও আত্মপরিচয়ের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনে নেমেছিল ৷ রেল ও রাস্তা রোকো কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল ৷ এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার অভিযোগে সেই সময় একাধিক কুড়মি নেতাকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্যের গোয়েন্দা দফতর ৷