কলকাতা, 6 সেপ্টেম্বর: শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের পরেই কি তাঁর অপরাধের সংখ্যা বেড়ে গেল ? এবার রাজ্যকে অস্বস্তিতে ফেলে প্রশ্ন করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত । শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার 27টি এফআইআর দায়ের করেছিল । সেই মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রক্ষাকবচ দিয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতাকে গ্রেফতার করা যাবে না হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া । পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে নতুন করে এফআইআর দায়ের করতে গেলেও আদালতের অনুমতি নিতে হবে ।
সেই সংক্রান্ত মামলায় বুধবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত প্রশ্ন করেন, "তিনি (শুভেন্দু অধিকারী) যখন আপনাদের সঙ্গে ছিলেন, তখন কি কোনও অপরাধ করেননি ? দলবদলের পরেই এতগুলি অপরাধ ?" রাজ্যের তরফের আইনজীবী কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, "হতে পারে সেই সময় তিনি শৃঙ্খলাপরায়ণ ছিলেন । আজকে অপরাধ করছেন না মানে কাল করবেন না, তার তো কোনও মানে নেই ।"
একথা শুনে বিচারপতির পালটা টিপ্পনি, "এটাও হতে পারে আপনারা তাঁকে আড়াল করছিলেন । দলবদলের আগে মাত্র একটি অপরাধের অভিযোগ । আর দলবদলের পরেই অল্প সময়ের মধ্যে 27টি অভিযোগ । এই পরিসংখ্যান কিন্তু আপনাদের বিপক্ষে যেতে পারে ।"
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ফের যুক্তি সাজিয়ে বলেন, "আমি বিরোধী শিবিরে চলে গিয়েছি মানেই আমার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না, এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয় । শুভেন্দু অধিকারী যদি বিরোধী দলনেতা হিসাবে পাঁচটি জায়গায় গিয়ে পাঁচবার গন্ডগোল করেন, তাহলে আমরা কী করব ? কোনও পদক্ষেপ করব না ?"
এ দিন শুভেন্দু অধিকারীর তরফে আইনজীবী এসএস পাটোয়ালিয়া বলেন, "শুভেন্দু অধিকারী দলবদলানোর পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নেওয়ার জন্যই রাজ্য সরকার একের পর এক অভিযোগ দায়ের করেছে ।"
উল্লেখ্য, গত বছর বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা 27টি মামলায় শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ দেওয়ার পর রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে । সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টকেই নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেয় । সম্প্রতি ফের সুমন সিংহ নামে এক ব্যাক্তি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কেন এফআইআর করা যাবে না, সেই প্রশ্ন তুলে জনস্বার্থ মামলা করেন । তাতে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় রায় দেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সারবত্তা থাকলে অবশ্যই এফআইআর করা যাবে ।
আরও পড়ুন: পুলিশের বিরুদ্ধে কটূক্তি করার অভিযোগে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর-এর আবেদন নিয়ে হাইকোর্টে মামলা
শুভেন্দু অধিকারী ফের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন । শীর্ষ আদালত ফের কলকাতা হাইকোর্টেই মামলা ফেরত পাঠিয়ে বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ শুনানি করতে নির্দেশ দিয়েছেন । বুধবার সেই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতেই আদালতে অস্বস্তিতে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে ৷