কলকাতা, 17 জুলাই : রাজ্য সরকারের ধাক্কা হাইকোর্টে । এবার ইশু বিধাননগর পৌরনিগম-মেয়র সব্যসাচী দত্ত । আজ কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল আগামীকাল আস্থাভোট হচ্ছে না বিধাননগর পৌরনিগমে । কারণ, সব্যসাচীকে সরানোর জন্য যে প্রক্রিয়ায় আস্থাভোটের নোটিশ জারি করা হয়েছিল তা সঠিক ছিল না । আর সে কারণেই সেই নোটিশ খারিজ করে দিল বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চ ।
সব্যসাচী দত্তকে নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে । বিধাননগর পৌরনিগমের কাউন্সিলরদের একটা বৃহৎ অংশ সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন । তাঁদের অভিযোগ ছিল সব্যসাচী দত্তের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয় । সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার কথাও বলেছিলেন তাঁরা । পাশাপাশি সব্যসাচীর সঙ্গে একাধিকবার মুকুল রায়ের সাক্ষাৎ ঘিরে শুরু হয় জল্পনা । দল যখন বিধাননগরের মেয়রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিচ্ছে তখনই মুকুল রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিয়েছিল । প্রেক্ষাপট যখন এমনই তখন বিধাননগরের পৌরনিগমের পৌর কমিশনার আস্থা ভোটের নোটিশ জারি করেছিলেন । সেই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন সব্যসাচী । এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আজ হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, আস্থাভোটের নোটিশ জারি করার ক্ষমতা পৌর কমিশনারের নয় । এই নোটিশ জারি করতে পারেন একমাত্র চেয়ারপার্সন । একই সঙ্গে বলা হয়েছে, 48 ঘণ্টার মধ্যে চেয়ারপার্সনকে এবিষয়ে নোটিশ জারি করতে হবে । যার মোদ্দা কথা, সব্যসাচী বলেছিলেন বেআইনিভাবে নোটিশ দেওয়া হয়েছে । সেই দাবিকেই মান্যতা দিল কলকাতা হাইকোর্ট ।
রায় ঘোষণার পরই রাজ্য প্রশাসনকে আক্রমণ করেন বিধাননগরের মেয়র । সিরিয়া, লেবাননের মতো জঙ্গি অধ্যুষিত দেশের সঙ্গে তুলনা করে সব্যসাচীর কটাক্ষ, মনে হচ্ছে যেন সিরিয়া বা লেবাননের মতো কোনও দেশে আছি । আবার সব্যসাচীর আইনজীবীদের দাবি, নোটিশ যে অবৈধ ছিল সেকথাই প্রমাণিত হল । সব্যসাচী দত্তের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, "মেয়রকে অপসারণ করতে যে পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে তা সঠিক ছিল না । যেভাবে কমিশনার নোটিশ দিয়েছেন তা বৈধ নয় ।"
হাইকোর্টের নির্দেশ মতো 48 ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে আস্থাভোটের নোটিশ জারি করতে হবে চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে । অন্যদিকে, এদিনের রায় ঘোষণার পরই বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক করেন তাপস চট্টোপাধ্যায় ।