কলকাতা, 12 জুলাই: পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে মামলার চূড়ান্ত নির্দেশের উপর । বুধবার এ কথা জানাল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । এ ছাড়াও এই বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছে, কমিশন তার দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করেনি বলেই মনে করছে আদালত । এমনকী আজও কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে কেন্দ্রের নোডাল অফিসারের সঙ্গে ঠিকমতো যোগাযোগ করা হয়নি ।
প্রধান বিচাপতির ডিভিশন বেঞ্চ আজ বলেছে, শান্তিপুর্ণ পরিস্থিতি যাতে বিঘ্নিত না হয় তা দেখার দায়িত্ব রাজ্যের । তাতে ব্যর্থ রাজ্য । এই অভিযোগ গুরুতর । রাজ্য নির্বাচন কমিশন হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাবে এই সমস্ত ব্যাপারে । এতদিন আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে তা ঠিকঠাক পালন করা হয়েছে কি না, তাও জানাতে হবে । বিভিন্ন জায়গার ভিডিয়ো ফুটেজ সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে । 20 জুলাই এই মামলায় ফের শুনানি হবে ।
এ দিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী গুরুকৃষ্ণ কুমার আদালতে বলেন, ব্যালট পেপার ট্যাম্পারিং হয়েছে । ভোটের দিন এবং আগের ও পরের দিন লুট হয়েছে ভোট । কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করা হয়নি বুথে । গণনার দিন অশান্তি হয়েছে । রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানানো হয়েছে । ছবি ও ভিডিয়ো দিয়ে বলা হয়েছে কীভাবে ভোট লুট হয়েছে । কিন্তু পুনর্নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেখানে অশান্তি হয়েছে, সেখানে রিপোলের নির্দেশই দেয়নি কমিশন । যেখানে মৃত্যু হয়ছে সেখানেও রিপোলের নির্দেশ দেয়নি । প্রায় ছয় হাজার বুথে অশান্তি হয়ছে । প্রার্থীরা মার খেয়েছেন । কমিশনের কোনও নিরাপত্তা নেই । কমিশনের কাছে যখন সংবাদমাধ্যম গুলি চলার বিষয়ে জানতে চায়, তখন তিনি বলেন, 'কে কোথায় গুলি মারবে সেটা কি আমার দায়িত্ব !'
আরও পড়ুন: গ্রামবাংলায় তৃণমূল ঝড়, দেখুন প্রতি মুহূর্তের খবর
এ দিন বুথ দখল ও ভোট লুটের ভিডিয়ো দেখানো হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চকে । পুনর্নির্বাচনের পর বেশিরভাগ বুথে বিজেপি জয়ী হয়েছে বলে দাবি করেন বিরোধীদের আইনজীবী ৷ তাঁর অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ মতো কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করেনি কমিশন ।
বিজেপির আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল এ দিন বলেন, কাঁচড়াপাড়া, কেতুগ্রাম, ধনিয়াখালি-সহ বিভিন্ন জায়গায় 2021 সালের বিধানসভার পর রাজ্যে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, ঠিক একই পরিস্থিতি এখন রাজ্যে । সাধারণ মানুষ ঘরে থাকতে পারছেন না । 2021 সালের ঘটনার পর আদালত একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিল এই ব্যাপারটি দেখার জন্য ।
অ্যাডিশনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে অভিযোগ উঠেছে, তার কারণ কমিশনের অসহযোগিতা । নিরন্তর কমিশন অসহযোগিতা চালিয়ে গিয়েছে । কোনও রকম তথ্য ঠিকঠাক দেওয়া হয়নি ।
এই সব শোনার পর আদালত বিভিন্ন জায়গার ভিডিয়ো ফুটেজ সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশনকে । 20 জুলাই এই মামলার ফের শুনানি ।