কলকাতা, 1 অগস্ট: হাওড়ার উলুবেড়িয়া-1 এর বিডিওর মামলায় এই মুহূর্তে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে হস্তক্ষেপ নয় বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ । বিডিওকে বরখাস্ত করার সুপারিশের বিরুদ্ধে আপিল সংক্রান্ত মামলা তাই আবার সিঙ্গল বেঞ্চে পাঠাল ডিভিশন বেঞ্চ । বিডিওর বক্তব্য শোনার পর চূড়ান্ত রায় বিচারপতি অমৃতা সিনহা দেবেন বলে নির্দেশ বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় ও বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের ।
মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় উলুবেড়িয়া-1 এর বিডিও-কে বলেন, "সংবিধান আপনাকে বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছিল । আপনি সেটা পালন করেননি । আপনি শপথ নিয়েছিলেন । সেটা রক্ষা করার কর্তব্য নয় আপনার ? আপনার বিরুদ্ধে চিটিং-এর অভিযোগ আছে ৷"
বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, "ডিভিশন বেঞ্চ যে কমিশন গড়ে দিয়েছিল, সেই কমিটি রিপোর্ট দিয়েছে । (অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে কমিশন) সেই রিপোর্টকে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি । আদালত নিজে গিয়ে তদন্ত করে না । তাই এই কমিটি বা কমিশনের রিপোর্টে আমরা ভরসা করব । আবার সিঙ্গল বেঞ্চে পাঠাব এটা । আমরা আপাতত একক বেঞ্চের রায়ে হাত দেব না ।"
আরও পড়ুন: বিরোধী দলের প্রার্থীদের ব্যালট বিকৃত করেছেন বিডিও, এসডিও; রিপোর্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির
আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য মামলাকারী বিডিওর তরফে বলেন, " স্ক্রুটিনিতে অংশ নিয়েছিলেন বিডিও উলুবেড়িয়া-1 ৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ কাশ্মীরা বিবির ব্যালট পেপার ষড়যন্ত্র করে বদলেছেন । বিডিও নীলাদ্রি দের বিরুদ্ধে অভিযোগ । কমিশনের উপর তদন্তের নির্দেশ ছিল । শুধু রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে তাঁকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । তাঁর কথা শোনা হয়নি । আপাতত একটা সুরক্ষাকবচ দেওয়া হোক । না হলে চাকরির উপর ছেদ পড়তে পারে ।"
অন্যদিকে রাজ্য জানায় ইতিমধ্যেই তাঁকে বরখাস্ত করার নোটিশ পাঠানো হয়েছে । যদিও ডিভিশন বেঞ্চ কোনও বক্তব্য শুনতে চায়নি । সিঙ্গল বেঞ্চকেই বিষয়টি শুনতে নির্দেশ দিয়েছে ।
উল্লেখ্য, গত 27 জুলাই উলুবেড়িয়ার সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরা বিবির ব্যালট পেপার ষড়যন্ত্র করে বিকৃত করা হয়েছে বলে আদালতে রিপোর্ট দেয় প্রাক্তন বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে কমিটি । কমিটি রিপোর্ট দিয়ে জানায়, এই কাজে বিডিও, এসডিওর সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করেছেন । একই সঙ্গে এই চক্রে যুক্ত অতিরিক্ত অনগ্রসর শ্রেণি দফতরের অফিসার । তাঁদের তিনজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে পদক্ষেপ করতে হবে, প্রাক্তন বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র অনুসন্ধান রিপোর্ট দিয়ে এই সুপারিশ করেন আদালতে । পাশাপাশি তিনি এফআইআর করতেও সুপারিশ করেন । তার পরই হাইকোর্ট তাঁকে সাসপেন্ড করতে নির্দেশ দেয় ৷
আরও পড়ুন: অভিষেকের পর এবার শতরূপা ভট্টাচার্যের জামিন মামলা ফেরত পাঠালেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ
এর বিরুদ্ধে উলুবেড়িয়ার বিডিও হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছিলেন । কিন্তু সেই আপিল ফিরিয়ে দেওয়া হল সিঙ্গল বেঞ্চে ৷ এবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ৷