কলকাতা, 4 সেপ্টেম্বর: ময়না থানা এলাকায় বিজেপি নেতা খুনে পুলিশের কাজে অস্বচ্ছতা রয়েছে বলে কড়া সমালোচনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আদতে অভিযুক্তদের জামিন পাইয়ে দিতে পুলিশ সক্রিয় হয়েছে, এ ব্যাপারে রাজ্যের রিপোর্টও তলব করেছেন বিচারপতি।
গত মে মাসে পুর্ব মেদিনীপুরে ময়নার বিজেপি বুথ সভাপতি বিজয় কৃষ্ণ ভুঁইয়াকে তাঁর বাড়ি থেকে স্ত্রী ও ছেলের সামনে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডারা ৷ এমনটাই অভিযোগ ওঠে বিজেপির পক্ষ থেকে। আর সেই বিজেপি নেতা বিজয় কৃষ্ণ ভুঁইয়ার খুনের মামলায় সোমবার বড়সড় পুলিশি অস্বচ্ছতা ধরা পড়েছে আদালতের সামনে। শুনানিতে দেখা যায়, 4 অগস্ট চার্জশিটে সই করা হলেও পুলিশ তা আদালতে জমা দেয় 5 অগস্ট বিকেলের দিকে। আর এই দেরির কারণে, মামলার তিন জন মূল অভিযুক্ত গত 5 অগস্ট দুপুরেই 90 দিনের মাথায় চার্জশিট জমা না পড়ায় বিধিবদ্ধ জামিন পেয়ে যায়। এটা পুলিশ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই করেছে বলে স্পষ্ট জানায় আদালতের। মূল অভিযুক্তকে জামিন পাইয়ে দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছে বলেও মনে করেন বিচারপতি।
ক্ষুব্ধ বিচারপতি এদিন সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, "কেনও অফিসারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের নির্দেশ দেব না ! আগে অভিযোগের জবাব দিন।" এখানেই শেষ নয়, পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, "এই কোর্ট সিআইডি বা অন্য কোনও এজেন্সিকে তদন্ত হস্তান্তর করতে চায় না। কিন্তু কেন সেটা করতে হয় তার সবচেয়ে খারাপ উদাহরণের একটা এই মামলা ৷"
অভিযোগ, মৃতের বাড়ির লোক অভিযোগ জানালেও পুলিশ সেটা গ্রহণ না করে পৃথক স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ দায়ের করে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে গলদ থাকায় হাইকোর্টের নির্দেশে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তও হয়েছিল। তফশিলি আইন আদালতের নির্দেশে যুক্ত করা হলেও কী করে জামিন দেওয়া হল, তা নিয়েও উঠছে বিস্তর প্রশ্ন ৷ একই সঙ্গে, সেদিন বোমাবাজি হলেও 'এক্সপ্লোসিভ সাবসটেন্স আইন'-এর ধারা এই মামলায় দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ।
আরও পড়ুন: আমার পরিবারও হেনস্তার শিকার, বিজেপিকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর
এদিন মামলার শুনানি শেষে বিচারপতি নির্দেশে জানান, রাজ্যকে আগামী শুনানির দিন রিপোর্ট দিয়ে ব্যাখ্যা করতে হবে মূল অভিযুক্তরা কীভাবে এই মামলায় জামিন পেল ৷ 18 সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। একই সঙ্গে, মামলার কেস ডাইরি সেদিন আদালতে পুলিশকে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।