কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর: যে কোনও পরিবারে স্ত্রীর রোজগারের বিষয়টি একেবারেই আলাদা ৷ সেই পরিবারে স্ত্রীর উপার্জনের সঙ্গে অন্য সদস্যের উপার্জনের তুলনা করা যথার্থ নয়। এমনই মনে করে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ পরিবারে স্ত্রীর অনেক দায়িত্ব থাকে ৷ অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি তাঁকে সংসারের আরও অনেক কাজ করতে হয়। বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানিতে এই কথা জানান বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তা ৷
পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন প্রতিমা সাহু ৷ এই দুর্ঘটনায় মোটর অ্যাক্সিডেন্ট ক্লেমস ট্রাইব্যুনালের থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন তিনি ৷ কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সেই আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ তাদের দাবি, কারও মাসিক আয় 3 হাজার টাকার মধ্যে হলে তাঁর ক্ষতিপূরণের আবেদন মঞ্জুর করা যায় ৷ প্রতিমা সাহুর ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয় ৷ কারণ তিনি মাসে 4 হাজার টাকা উপার্জন করেন ৷ এক্ষেত্রে প্রতিমা সাহুকে পরিবারের অন্য সদস্যদের মতোই মনে করেছিল ট্রাব্যুনাল ৷ একজন উপার্জনকারী স্ত্রী হিসেবে আলাদা করে তাঁর আবেদন বিবেচনা করা হয়নি ৷
এরপর তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন ৷ এমএসিটির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন ৷ বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল ৷ সেখানে বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তা তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, স্ত্রীর উপার্জনের সঙ্গে পরিবারের অন্য সদস্যদের উপার্জনের তুলনা করাটা যথার্থ নয় ৷
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, "এরকম ক্ষেত্রে তাঁর (স্ত্রীর) উপার্জনের প্রমাণ চাওয়াটাও অপ্রত্যাশিত ৷ আমাদের সবার মনে রাখা উচিত, একজন স্ত্রীর দায়িত্ব শুধুমাত্র উপার্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না ৷ তাঁর উপর গোটা সংসারের দায়িত্ব থাকে ৷ সবার জন্য রান্না করা, বাড়িঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়গুলিও সামলাতে হয় ৷ পাশাপাশি পরিবারের সব সদস্যের খেয়ালও রাখতে হয় ৷ এতকিছু করার পর তিনি অর্থ উপার্জন করেন ৷ তাই পরিবারের অন্য যাঁরা রোজগার করছেন তাঁদের সঙ্গে স্ত্রীর তুলনা কাম্য নয় ৷"
আরও পড়ুন: বাবা ও মা পরস্পরের স্নেহ থেকে সন্তানকে বঞ্চিত করলে তা নিষ্ঠুরতা: দিল্লি হাইকোর্ট