কলকাতা, 16 মে: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়া অর্থাৎ হরিশ মুখার্জি রোড ধরে বুধবার হ্যারিকেন মিছিল করতে পারবেন না গ্রুপ-ডি চাকরি প্রার্থীরা ৷ মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ । এমনকী এই মিছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি কালীঘাটের নিকটবর্তী জায়গা দিয়েও যাওয়া যাবে না ৷ সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা মিছিলের অনুমতি দিলেও 24 ঘণ্টার মধ্যে নির্দেশ খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চ ৷ সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছিল রাজ্য সরকার ৷
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানিয়েছে, হরিশ মুখার্জী রোড ধরে কোনও মিছিল করা যাবে না ৷ একই সঙ্গে বদলাতে বলা হয়েছে মিছিলের সময়ও ৷ গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছিলেন, তারা সন্ধে 6টায় মিছিল করতে চান ৷ কিন্তু এদিন ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, দুপুর 12টা থেকে বিকেল সাড়ে 4টের মধ্যে শেষ করতে হবে হ্যারিকেন মিছিল ।
শহিদ মিনার ময়দান থেকে মিছিল শুরু হবে । সেই মিছিল যাবে কালীঘাট পুলিশ স্টেশন পর্যন্ত । তবে সেই মিছিল কোনও ভাবেই হরিশ মুখার্জী রোড ধরতে পারবে না । হাজরা রোড দিয়েও মিছিল নিয়ে যাওয়া যাবে না ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে একটি রুট তৈরি করে দেওয়া হবে এবং পুলিশ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে । তবে মিছিল থেকে কোনওরকমের স্পর্শকাতর মন্তব্য করা যাবে না। এসবই বলা রয়েছে ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে ৷
এদিন মামলার শুনানিতে, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জানতে চান, কত লোকের জমায়েত হতে পারে? রাজ্য জানায়, চারশোর মতো। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, "সন্ধ্যে 6টা থেকে শুরু হবে মিছিল । শহিদ মিনার, মেয়ো রোড হয়ে হরিশ মুখার্জি রোড দিয়ে গিয়ে কালীঘাট মন্দিরের কাছে শেষ হওয়ার কথা। আমরা বলছি, সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং হয়ে শহিদ মিনার পর্যন্ত মিছিল হোক। ওই রাস্তাতে হলে, গোটা দক্ষিণ কলকাতা স্তব্ধ হয়ে যাবে। ওইদিন মিছিল হলে আপত্তি নেই আমাদের । আমরা শুধু রুট বদল করতে বলছি।"
এরপর বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, "ওনারা কালীঘাট চাইছেন, আপনারা রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড বলছেন। ওই রুটেই বলুন করতে।" জবাবে রাজ্যের তরফে জানান হয়, দক্ষিণ কলকাতায় মিছিল করতে হলে হাজরাতে শেষ করা হোক মিছিল। এরপর বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, "দক্ষিণেরশ্বর যেতে হলে কি সিঁথি গিয়ে থেমে গেলে হবে ?" এরপর রাজ্য জানায়, সন্ধ্যেবেলা অফিস টাইম। মানুষের বাড়ি ফেরার রাস্তা ওটা । এর পালটা গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি জানান, এটা কোনও রাজনৈতিক দলের মিছিল নয়। এটা বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের মিছিল। যারা সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল করছে। তারা যদি চাকরি পেত এই মিছিল তাদের করতেই হত না ।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকে চাকরি বাতিলের নির্দেশে সংশোধন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের, কতজনের চাকরি গেল ?