কলকাতা, 1 নভেম্বর : ক্লাবের সামনে পোস্টারে বড় বড় করে লেখা 'প্রলোভন নয়, স্বেচ্ছায় হোক রক্তদান' । যাঁরা রক্ত দিয়ে বাইরে আসছেন, তাঁদের প্রত্যেকের হাতেই একটি ইলিশ মাছ এবং ইন্ডাকশন ওভেন ৷ আজ কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে একটি রক্তদান শিবিরে এমনটাই ঘটল ৷ এর আগেও রক্তদানের বিনিময়ে মিলেছিল 'উপহার' ৷ উপহারের তালিকায় কখনও ছিল মোবাইল ফোন , কখনও বা পাখা , রেইনকোট ৷ পাওয়া গিয়েছিল মিক্সার গ্রাইন্ডারও ! অথচ , রক্তদান শিবিরে উপহার দেওয়া আইন বিরুদ্ধ ৷
কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলের মির্জাপুর বান্ধব সম্মিলনীতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় । চতুর্থ বছরে পড়ল এখানকার রক্তদান শিবির । বারবারই রক্তদাতাদের উপহার দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে এখানে ৷ আজও রক্ত সংগ্রহ করতে আসে একটি সরকারি ব্লাড ব্যাংক ৷ শেষে স্বাস্থ্য দপ্তরের তৎপরতায় বন্ধ করে দেওয়া হয় রক্তদান শিবির ।
ক্লাবের সম্পাদক সঞ্জয় নন্দীকে রক্তদান শিবিরের এরকম পদক্ষেপের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় ৷ তিনি উত্তরে বলেন, "রক্তদানের জন্য আমাদের 60 জন উপস্থিত ছিলেন । 49 জন রক্তদান করার পর স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে আমাদের এই রক্তদানের কর্মসূচি আটকে দিল কেন? আমরা নাকি উপহার দিয়েছি ? ওদের বিষয়টায় সমর্থন নেই । ওদের মনে হয়েছে আমরা উপহার দিচ্ছি । আমরা উপহার দিতে পারব না জানিয়ে রক্তদান শিবির বন্ধ করে দেওয়া হল । "
তিনি আরও বলেন, " আমরা উপহার দিইনি । আমরা স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়ার কথা বলেছি ৷ আমরা প্রলোভন দেখাইনি ৷ মানুষ ভালোবেসে রক্ত দিয়েছেন ,আমরা পরিবর্তে ইন্ডাকশন ও ইলিশ মাছ দিয়েছি । প্রথম বছর পাখা এবং রেইনকোট দিয়েছিলাম । এরপরের বছর দিয়েছিলাম মোবাইল ফোন । তার পরের বছর মিক্সার গ্রাইন্ডার । "
আজ এই শিবিরে রক্ত সংগ্রহে এসেছিল মানিকতলার সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাংক । এই শিবিরের বিষয়ে সেন্ট্রাল ব্লাডব্যাংকের অধিকর্তা স্বপন সরেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি ৷ সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে যোগাযোগ করা হয় সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাংকে । সেখানকার আধিকারিকরা এসে এদিনের এই শিবির বন্ধ করে দেন । এই বিষয়ে রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কফি হাউস সোশ্যাল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অচিন্ত্য লাহা বলেন, "এই ধরনের কাজকে ধিক্কার জানাই ।"