কলকাতা, 25 অগস্ট: বিজেপি’র পক্ষ থেকে 'যাদবপুর বাঁচাও' মিছিল ঘিরে ফের শুরু হল বিতর্ক । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জুতো দেখানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে । শুক্রবার গোলপার্ক থেকে বিজেপি যুব মোর্চার মিছিল শুরু হওয়ার পর মুহূর্তেই যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না-ঘটে তার জন্য কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ । বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল । কোনও পড়ুয়া যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আসতে না-পারে সেই বিষয়েও নজরদারি ছিল শিক্ষকদের । এছাড়াও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিশাল পুলিশ বাহিনীও এদিন মোতায়েন করা ছিল । তারপরও বিজেপির মিছিল থেকে জুতো দেখানোকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বর ৷
তবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই বিজেপির মিছিল আসতে বিভিন্ন রকম স্লোগান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে জুতো দেখানোর অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়কে লক্ষ্য করে বোতল এবং জুতো ছোড়া হয়েছে। কোনও পড়ুয়া কোনওরকম অপ্রতিকর কোনও মন্তব্য বা কার্যকলাপ করেনি বলেও দাবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। মিছিলের কর্মী-সমর্থকরাই এই ধরনের কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলেই দাবি করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মনোজিৎ মণ্ডল ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক রাজেশ্বর সিনহা প্রথম থেকেই চার নম্বর গেটের কাজে দাঁড়িয়েছিলেন। এছাড়াও পরবর্তীকালে সেখানে উপস্থিত হন অধ্যাপক পার্থপ্রতিম রায়, অম্বিকেশ মহাপাত্ররা।
এই পরিস্থিতির সময় অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডল বলেন, "এখানে সভা হওয়ার কথা ছিল না। আমাদের পড়ুয়ারা সবাই চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। ওরা বোতল, জুতো ছুঁড়ছে, এটা কী ?" অন্যদিকে, এই ধরনের কার্যকলাপের ফলে পড়ুয়াদের মধ্যে ভয় তৈরি হচ্ছে বলেই মত অধ্যাপক রাজেশ্বর সিনহার । তিনি বলেন, "কিছুদিন আগেই আমাদের পড়ুয়া তাদের এক সহপাঠীকে হারিয়েছে। বর্তমানে ওরা একটা ট্রমার মধ্যে আছে। আমরা চাইছি ওদের স্বাভাবিক করতে। কিন্তু এবার বাইরে থেকে যদি এই ধরনের কার্যকলাপ করা হয় তবে আরও ওদের মধ্যে ভয় তৈরি হবে।"
এদিনের এই ঘটনার প্রেক্ষিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল সংগঠনের সঞ্জীব প্রামাণিক বলেন, "শুভেন্দু, সুকান্ত ও দিলীপ, অমিত শাহ-এর কাছে কে আগে থাকবে তাই নিয়ে লড়াই চলছে। তবে যাদবপুরে যদি বিজেপি বা এবিভিপিকে আসতে হয় তাহলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সেটা বুঝে নেবে।" এই বিষয় নিয়ে এসএফআইয়ের সদস্য তর্পণ সরকার বলেন, "যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা তাদের ক্যাম্পাসের ভিতরে ছিল। বাইরে থেকে একটা দল মিছিল করে যাচ্ছে। তাতে আমাদের কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু যা হল এতেই ফারাকটা প্রমান করে দেয়। বিজেপির যা সংস্কৃতি তারা সেটা করেছে। আসলে র্যাগিং এর যে মূল ঘটনা সেখান থেকে নজর ঘোরানোর জন্য এই সব চলছে।"