কলকাতা, 11 জানুয়ারি: রাম ধর্মনিরপেক্ষ নন। এবং আমন্ত্রণ পত্র পেলেও তিনি 22 জানুয়ারি অযোধ্যা রাম লালার মন্দির উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন না। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন পুরীর শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী মহারাজ। আর এর পালটা কটাক্ষ করে বিজেপি সাংসদ ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "উনি কংগ্রেসের লোক। কংগ্রেসও রাম মন্দির উদ্বোধনে যাবে না, তাই উনিও যাবেন না।"
এদিন পুরী গোবর্ধন পীঠের শঙ্করাচার্য স্বামী নিশ্চলানন্দ সরস্বতী মহারাজ হাওড়া স্টেশনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের একাধিক উত্তর দেন। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, রাম 'সেকুলার' বা ধর্মনিরপেক্ষ নয়। প্রধানমন্ত্রী গর্ভগৃহে থাকবেন। উনি মূর্তি ছুঁয়ে পবিত্র করবেন। একে রাজনৈতিক রূপ দেওয়া হয়েছে। মর্যাদা পুরুষোত্তম রামকে যদি পবিত্র করতে হয় তবে তা শাস্ত্র অনুযায়ী হওয়া উচিত। তিনি বলেন, "অন্যথায় দেবতার মহিমা বিনষ্ট হয়ে যায় এবং বিলীন হয়ে গেলে ডাকিনী সাকানি ভূত-পিশাচের আকারে প্রবেশ করে সমগ্র এলাকা ধ্বংস করে দেয় ৷ আমি প্রতিবাদ করব না, যাবও না, আমি আমার কথা বলেছি । সব কিছু শাস্ত্র অনুসারে করতে হবে।"
এর পরিপ্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ জানান, উনি প্রথম থেকেই রাম মন্দির আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন। উনি সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাদা করে শিলান্যাসের পর ওখানে গিয়েছিলেন। উনি ওনার বক্তব্য বলেছেন কিন্তু ওই দিন সারাদেশ আনন্দ করবে রাম মন্দির উদ্বোধন নিয়ে। দিলীপ ঘোষ বলেন, "উনি কংগ্রেসী সাধু ৷ উনি কংগ্রেসের সঙ্গে আছেন। কংগ্রেসের যে নীতি সেটা মেনেই তিনি চলেন। কংগ্রেস যাচ্ছে না, তাই উনিও যাবেন না। আর উনি যে বলেছেন যে রাম ধর্মনিরপেক্ষ ছিল না, তখন তো এই সেকুলার কথাটাই ছিল না। শ্রীরাম হলেন রাষ্ট্রপুরুষ। সাধু হয়ে শ্রীরামকে এসব কথা বলে ছোট করছেন উনি। সাধু হয়ে ওনার এই ধরনের কথা বলা উচিত নয়।"
এই বিষয় কংগ্রেস মুখপাত্র অতুল লন্ধে পাতিল পালটা বলেন, "কংগ্রেস ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার বিরুদ্ধে। এই কথা থেকেই স্পষ্ট যে দিলীপ ঘোষের চিন্তাধারা কতখানি নিম্ন। যেহেতু লোকসভা আসছে তাই বিজেপি ধর্মকে রাজনীতির জন্য ব্যবহার করছে। এটা কংগ্রেস বলছে না শঙ্করাচার্য নিজেই বলেছেন।"
অন্যদিকে তৃণমূল মুখপাত্র ও বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় বলেন, "বিজেপি ধর্মকে ব্যবহার করছে। এরা ধার্মিকও নয়, ধর্মপ্রাণও নয় ৷ সনাতন ধর্মের কথা বললেও এরা ধর্মের ধারপাশ দিয়ে হাঁটে না। ভারতবর্ষের বুকে হিন্দু ধর্মের শেষ কথা বলেন শঙ্করাচার্যরা। তাই তাঁরা যখন সিদ্ধান্ত নেন যে, তাঁরা রাম মন্দির উদ্বোধনে যাবেন না তারাই কিন্তু ধর্মের শেষ কথাটা বলেন। হিন্দুরা শঙ্করাচার্যদের অনুসরণ করেন। তাই এর থেকে প্রমাণিত যে মানুষের ধর্মের আবেগকে এরা কাজে লাগালেও এরা ধর্মপ্রাণ মানুষ নয়। রাজনৈতিক কারণে এবং নির্বাচন এলেই এরা সব ধার্মিক হয়ে ওঠে।"
আরও পড়ুন