কলকাতা, 4 ডিসেম্বর: জাতীয় সংগীত অবমাননা মামলায় সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন বিজেপি বিধায়করা । জাতীয় সংগীত অবমাননা মামলায় বিজেপি বিধায়কদের গ্রেফতার করা যাবে না, করা যাবে না কোনও কড়া পদক্ষেপও ৷ এদিন এই অন্তর্বতী নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত । বিধায়কদের জিজ্ঞাসাবাদের নোটিশেও স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি । একইসঙ্গে এদিন বিধানসভার ধরনা মঞ্চের সিসিটিভি ফুটেজও তলব করেছে হাইকোর্ট । সমস্ত অসম্পাদিত ফুটেজ তলব করেছে হাইকোর্ট। বুধবার ফের এই মামলার শুনানি। মামলার কেস ডায়েরি ও সিসিটিভি ফুটেজও তলব করেছে হাইকোর্ট।
এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণ, বিধানসভায় যেহেতু একাধিক প্রবেশ পথ তাই সেখানে কাউকে জোর করে আটকে রাখা যায় না । এনিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও রয়েছে । পুলিশের ভূমিকায় বিস্ময় প্রকাশ করে বিচারপতি এদিন বলেন, "খুনের ঘটনায় যে পুলিশ এফআইআর নিতে চায় না, সেই পুলিশের গুণ্ডাদমন শাখা সঙ্গে সঙ্গে বিধানসভায় চলে এল !"
বিজেপির পক্ষে এদিন আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার এদিনের শুনানিতে বলেন, "বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে গুণ্ডাদমন শাখা তদন্ত শুরু করেছে । জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনে বাধা ও অন্য বিধায়কদের আম্বেদকর মূর্তির সামনে যেতে বাধা দিয়েছে বিজেপি বিধায়করা বলে অভিযোগ । জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার আগে তা জানানোর কথা। কিন্তু কোনও ঘোষণা করা হয়নি সেদিন এই নিয়ে । ডেকোরাম মেনে সেটা করার কথা । তিনজন তৃণমূল বিধায়ক অভিযোগ করেছেন তাঁদের ধারণার মধ্যে কিছু বিজেপি বিধায়ক এসে সেখানে স্লোগান দিতে থাকেন । তখন জাতীয় সঙ্গীত গাইছিলেন মুখ্যমন্ত্রী-সহ অন্যরা। অধ্যক্ষের নির্দেশে ওই অভিযোগপত্র হেয়ার স্ট্রিট থানায় পাঠানো হয়। বিধায়করা অভিযোগ করলেও সেক্রেটারি পৃথক অভিযোগে সই করেছেন । কারা আটকেছে তাদের কোনও নাম অভিযোগ পত্রে নেই। কোনও কর্মী বলেননি, তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে।"
রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত পালটা বলেন,"অভিযোগ দায়ের করার পর প্রাথমিক তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় আদালত এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে কি?" এরপর ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন, "খুনের অভিযোগে পুলিশ এফআইআর করছে না, ধর্ষণ মামলায় কোর্টে আসতে হচ্ছে বিচারপ্রার্থীকে পুলিশকে জাগাতে। সেখানে এমন একটা মামলা দায়ের ! আর সেই মামলা দু'ঘণ্টা ধরে শুনতে হবে কোর্টকে ! কিসের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হচ্ছিল তার ব্যাখ্যা দিন । মন্ত্রী উপস্থিত আছেন, তাই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে। এটা কোনও যুক্তি? তাহলে কোনও হোটেলে মন্ত্রী গেলে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে? রাস্তায় রাজনৈতিক যুদ্ধ চলছিল, সেইসময় আপনারা জাতীয় সঙ্গীত শুরু করে দিলেন? কোথায় গাইছেন, কেন গাইছেন সেটা দেখার দরকার নেই? চিৎকার চলছে, গোলমাল, স্লোগান হচ্ছে । তার মধ্যে গেয়ে উঠলেন জাতীয় সঙ্গীত।"
রাজ্যের তরফে এদিন হাইকোর্টে জানানো হয়, বিধানসভার সেক্রেটারি মামলায় যুক্ত হয়েছেন । ইতিমধ্যে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছে । তিনজন বিধায়ক ও 13 জন কর্মী এবং সাতজন পুলিশ কর্মীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে । বিচারপতি সেনগুপ্ত এরপরেই নির্দেশ দেন, কেস ডায়েরি ও সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে আদালতে জমা করতে হবে ।
আরও পড়ুন: