কলকাতা, 24 জুলাই: তৃণমূলের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক বিজেপির শংকর ঘোষ ৷ তাঁর দাবি, ‘‘ইতিহাসও সাক্ষী আছে যে অত্যাচারী শাসকের শেষটা কখনোই সুন্দর হয়নি ।’’ সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তিনি সাংবাদিক বৈঠক করেন ৷ সেখানেই তিনি এই কথা বলেন ৷
শংকর ঘোষের কথায়, ‘‘বাড়ি ঘেরাও এর রাজনীতি কখনোই সমর্থনযোগ্য নয় । আর এই ধরনের কর্মসূচি যদি তৃণমূল কংগ্রেস গ্রহণ করতে চায়, তাহলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন । তাছাড়া বিজেপির সমস্ত বিধায়করা এর পালটা জবাব দেবে । কারণ, ইতিহাসও সাক্ষী আছে যে অত্যাচারী শাসকের শেষটা কখনোই সুন্দর হয়নি ।’’
তৃণমূলের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি: প্রসঙ্গত, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আগামী 5 অগস্ট রাজ্যজুড়ে বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন ৷ অভিষেক বুথে বুথে এই কর্মসূচি পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ পরে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ব্লকে ব্লকে প্রতীকী হিসেবে এই কর্মসূচি পালন করতে বলেছেন ৷ কিন্তু এই নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক ৷ ইতিমধ্যে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা ৷
আরও পড়ুন: বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও ইস্যুতে অভিষেকের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা শুভেন্দুর
বাড়ি ঘেরাও নিয়ে শংকর ঘোষের বক্তব্য: সোমবার বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি সম্পর্কে শংকর ঘোষের বক্তব্য, ‘‘এই ধরনের কর্মসূচির ঘোষণা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটা নিম্ন রুচির পরিচয় দিয়েছেন । তিনি যে একজন নিম্নমেধা এবং নিম্নরুচির রাজনীতিবিদ, এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তিনি সেটা প্রমাণ করলেন ।’’ শংকরের অভিযোগ, নিজে থাকেন কয়েকশো কোটি টাকার বাড়িতে এবং উত্তেজিত করছেন তৃণমূলের সমর্থকদের, যাতে এই ধরনের একটা হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয় ৷
তিনি আরও বলেন, ‘‘যেদিন এর পালটা জবাব দেওয়া হবে, সেদিন তো তিনি দুবাই পালাবেন । কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা তো এই রাজ্যেই থাকবে । আমি শুনেছি অভিষেকবাবুর দুটো ছোট সন্তান আছে ৷ তাহলে ভাবুন তো মানুষ তাঁকে বিভিন্ন ভাবে দুর্নীতির পীঠস্থান বলেন আর আগামিদিনে সরকার বদল হওয়ার পরে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ যদি তাঁর ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে ও তাঁর বাড়িতে আছড়ে পড়ে, তখন কি সেটা ভালো হবে ৷ তখন তো অভিষেকবাবুর পেছনে আর তিন হাজার পুলিশের প্রহরা থাকবে না ।"
অন্যদিকে তিনি কটাক্ষ করেন নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে ৷ শংকরের কথায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যেভাবে বিধানসভার সম্মানহানি ঘটিয়েছেন, তাঁকে (পার্থ) কী ধরনের শাস্তি দিলে পুনরায় বিধানসভার সম্মান ফিরে আসবে সেটা সময় বলবে । এছাড়া তাঁর দাবি, মণিপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেরে হিংসা দু’টি একেবারেই পৃথক ঘটনা । কেন্দ্র তথা মণিপুরের সরকার সচেষ্ট হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি সেখানকার পরিস্থিতি তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় ।
আরও পড়ুন: 5 অগস্ট রাজ্যের বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক অভিষেকের
একই সঙ্গে তাঁর দাবি, রাজ্যে ঘুরে যাওয়ার তথ্য অনুসন্ধানকারী দলের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে আগামিদিনে বিজেপি আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করবে ৷ পাশাপাশি তিনি জানান, বিজেপি আশা রাখে যে তথ্য অনুসন্ধানকারী দলের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে আগামিদিনে সরকার পদক্ষেপ করবে । আর তিনি মালদায় দুই মহিলার উপর অত্যাচারের ঘটনার প্রেক্ষিতে জেলার পুলিশ সুপারের অপসারণ দাবি করেছেন ৷