কলকাতা, 2 মে : প্রথম চার দফার ভোট শেষে বিজেপির তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল ম্য়াজিক ফিগারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে তারা ৷ মোদি, অমিত শাহ রাজ্য় সফরে এসে বারবার বলেছিলেন, "অব কি বার, 200 পার ৷" 200 পার তো দূরের কথা ৷ যা ট্রেন্ড তাতে তো একপ্রকার প্রশান্ত কিশোরের কথাই মিলে গেল ৷ 100-র গন্ডি টপকাতে পারল না বিজেপি ৷ কিন্তু কেন এই হাল বিজেপির ?
চার রাজ্য় ও একটি কেন্দ্র শাসিত রাজ্য়ের নির্বাচন হলেও বিজেপির লক্ষ্য় ছিল বাংলা দখল ৷ বাংলা দখল করতে কোনও চেষ্টার খামতি রাখেনি তারা ৷ মোদি ও অমিত একাধিকবার রাজ্য় সফর করেছেন ৷ প্রায় 18টি সভা করেছিলেন মোদি একা ৷ মোদি ও শাহ ছাড়াও একাধিক বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন ৷ কিন্তু তাতেও ভরাডুবি ৷ কেন এই পরিস্থিতি তা নিয়ে ইতিমধ্য়ে শুরু হয়েছে পর্যালোচনা ৷
বেলা যত গড়িয়েছে ততই বিজেপির অবস্থা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে ৷ সূত্রের খবর, দিল্লি থেকে ইতিমধ্য়ে একাধিক ফোন রাজ্য় নেতাদের কাছে এসেছে ৷ রাজ্য়ের ভরাডুবি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে ৷
এবিষয়ে বিজেপির কোনও নেতা সেভাবে প্রকাশ্য়ে কিছু না বললেও, কৈলাস বিজয়বর্গীয় সকালেই বলেছিলেন, তাঁরা পুরো বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন ৷ তাঁর মতে, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কথা হয়তো মানুষের মধ্য়ে বেশি গ্রহণযোগ্য় মনে হয়েছে, সেকারণেই বাংলার মানুষ মমতার উপর ভরসা রেখেছেন ৷
আরও পড়ুন- তৃণমূলকে রাজ্যে ক্ষমতায় এনে অবসর নেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ পিকে-র
পাশাপশি দলের নীতি ও স্ট্য়াটেজি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে ৷ অনেকেই বলেছেন, বাংলা দখলের জন্য় দিল্লির নেতাদের উপর সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু সম্ভবত বাংলার মানুষের মন বুঝতে তাঁরা সমর্থ হননি ৷ আবার অনেকে মনে করছেন, বিভিন্ন কর্মসূচি করলেও দলের সংগঠন মজবুত করার জন্য় সেরকম কোনও উদ্য়োগ নেয়নি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ৷ সেকারণেই এই হাল ৷
জেলা নেতৃত্বের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতাদের ৷ কিন্তু তাঁদের মধ্য়ে অনেকেই জেলার নেতাদের অবিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন ৷ পাশাপাশি প্রার্থী নিয়েও ক্ষোভ ছিল অনেক নেতা ও কর্মীর ৷ সেকারণে ভরাডুবি বলে মনে করছেন অনেকে ৷
বিজেপির অন্দরে দোষারোপ শুরু হলেও আলোচনাও শুরু হয়েছে যে, অনেক জায়গায় দলের পুরোনো কর্মীদের উপর ভরসা না রেখে তৃণমূল বা অন্য় দল থেকে আসা নেতাদের উপর ভরসা রাখা হয়েছিল ৷ তাতে অনেক পুরোনো নেতা ক্ষুব্ধ হয়েছেন ৷ এমনকী ভরাডুবির জন্য় কাউকে সরাসরি দায়ী না করলেও ইঙ্গিতে মোদি-অমিত শাহের দিকে আঙুল তুলেছেন অনেকে ৷