কলকাতা, 1 অগাস্ট : রীতিমতো প্ল্যান করেই বেহালায় বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছিল । কাঠ এবং রঙের মিস্ত্রিরা মদের আসরে করেছিল খুনের ছক । গতকাল সন্ধ্যায় ঠাকুরপুকুর বাজার এলাকা থেকে ধৃত রজক আলি সর্দারকে জেরা করে এমন তথ্যই পেল পুলিশ । এখন খোঁজ চলছে সুলতান নামে আর একজনের ৷
বছর পঁচাত্তরের ওই বৃদ্ধার নাম শুভ্রাঘোষ দস্তিদার । ছেলে-বউমা ও নাতনির সঙ্গে বেহালার 126 B শিশিরবাগানে থাকতেন । 25 জুলাই বাড়ির মেঝেতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় বৃদ্ধার মৃতদেহ ৷ বাড়ির কাজের জন্য একজন পরিচারিকা ছিল ৷ ঘটনার দিন সকালে ছেলে ও বউমা কাজে বেরিয়ে যান ৷ নাতনি স্কুলে গেছিল । বাড়িতে একাই ছিলেন শুভ্রাদেবী । পরিচারিকা সকাল 11 টায় এসে দেখেন, বাড়ির সদর দরজা খোলা কিন্তু ভিতরের দরজা বন্ধ ৷ ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি । প্রথমে চলে যান । পরে আবার ঘুরে এসে বৃদ্ধাকে ডাকেন । কিন্তু সাড়া মেলেনি । সন্দেহ হয় তাঁর ৷ বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান ৷ দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলে দেখা যায়, মেঝেতে ফাঁস লাগানো অবস্থায় পড়ে রয়েছেন শুভ্রাদেবী ৷ গলায় গামছা জড়ানো এবং মুখের সামনে একটা রুমাল রাখা । জিনিসপত্র অগোছালো অবস্থায় পড়ে রয়েছে ।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, খোয়া গেছে বৃদ্ধার মোবাইল। অগোছালো জিনিসপত্র দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়, টাকা ও জিনিসপত্র হাতানোর তালে খুন করা হয়েছে ওই বৃদ্ধাকে । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, দিন কয়েক আগে ওই বাড়িতে রং ও কাঠের কাজ হয়েছে । সেই সুত্রেই খোঁজ পড়ে কাঠমিস্ত্রির । তদন্ত উঠে আসে তার নাম সাহেব । প্রথমে তাকে আটক করে পুলিশ । পরে গ্রেপ্তার করা হয় ৷ শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ । আর তাতেই ভেঙে পড়ে সে । পুলিশ জানিয়েছে, খুনের কথা স্বীকার করেছে সাহেব । তার কাছেই পুলিশ খোঁজ পায় ৬২ বছরের রজকের । সে পেশায় রিকশা চালক ।
সে এই খুনের ঘটনায় যুক্ত হল কীভাবে?
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা বলেন, দুই রংমিস্ত্রি এবং কাঠের মিস্ত্রি সাহেব ও সুলতান কাজ করেছিল ওই বাড়িতে । তাদের বন্ধু ওই রজক । বৃদ্ধার মুখে যে রুমাল রাখা ছিল, সেই রুমাল রজকের । তবে এই পরিকল্পনা সাহেব এবং সুলতানের । আপাতত সুলতানের খোঁজ করছে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা ।