কলকাতা, ১৩ মার্চ : এ রাজ্যের আন্তর্জাতিক সীমান্ত নিয়ে চিন্তিত নির্বাচন কমিশন। মূল চিন্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত। আর তাই প্রতিবেশী দুই দেশের সাহায্য অত্যন্ত জরুরি। সেই সূত্রে ওই দুই দেশের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে বলে সূত্রের খবর। বৈঠক হয়েছে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে। সেখানে এ দেশে শান্তিপূর্ণ ভোট করতে ওই দুই দেশের সাহায্যের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন এ রাজ্যের কয়েকজন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার।
অভিযোগটা নতুন নয়। ভোটের সময় বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এ দেশে এসে রাজনৈতিক দলের হয়ে সন্ত্রাস চালায়। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী প্রত্যেকটি রাজ্যে এমন ধরনের অভিযোগ ওঠে ভোটের সময়। এ রাজ্যেও বাংলাদেশ থেকে ভাড়াটে গুন্ডা আসার অভিযোগও উঠেছে অতীতে। অতীতের সেই শিক্ষা থেকে এবার বাংলাদেশ এবং ভারতের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। দুই দেশের বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপার, IG পর্যায়ের অফিসার, ডিভিশনাল কমিশনার এবং জেলাশাসকরা মিলে বৈঠক করেছেন বেশ কয়েক দফায়। স্পর্শকাতর কয়েকটি জেলার ক্ষেত্রে BSF-BDR পর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ভোটের আগে এবং ভোটের সময় নজরদারি বাড়ানো হবে সীমান্তে। বাংলাদেশ থেকে কোনও দুষ্কৃতী যেন এদেশে না ঢুকতে পারে সে বিষয়ে বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছে। কোনওভাবে হাওয়ালার টাকা যাতে বাংলাদেশ থেকে এদেশে আসতে না পারে সেটাও দেখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ভোটের সময় সীমান্ত সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ এবং ভুটান প্রশাসনকে।
আগামী ১১ এপ্রিল রাজ্যে প্রথম দফার ভোট। সেই দফায় ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকায় ভোট হবে। সীমান্ত পার হয়ে সেদেশে কোনও দুষ্কৃতী লুকিয়ে আছে কি না সে বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে ভুটান প্রশাসনকে। তবে কমিশনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ভুটান থেকে মদের জোগান বন্ধ করা। কমিশনের ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট বলছে, ভোটের আগে চা বস্তিগুলোই ভুটানের মদ বিলির মতো ঘটনা ঘটেছে অতীতে। সেদেশে মদের দাম ভারতের তুলনায় অত্যন্ত কম। আর তাই ভুটানের মদ ঢিলেঢালা সীমানার সুযোগ নিয়ে এদেশে ঢোকানো হয়। তারপর নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিলি করা হয় মানুষের মধ্যে। যাতে কোনওভাবেই ভুটানের মদ এদেশে না ঢুকতে পারে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে আবগারি দপ্তর এবং ভুটান প্রশাসনকে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ভুটান প্রশাসনের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়ে গেছে। প্রয়োজনে আরও এক দফা বৈঠক হতে পারে।