কলকাতা, 9 মার্চ: গরম বাড়ায় কমবে কি অ্য়াডিনো ভাইরাসের প্রকোপ ? বাগে আসবে শিশুদের সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা ? শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা কিন্তু তেমনই আশার কথা শোনাচ্ছেন ৷ তাঁরা বলছেন, মরশুম বদলের সময় ভাইরাস যতটা শক্তিশালী থাকে, গ্রীষ্মের দাবদাহ শুরু হলে, তার সেই দাপট অনেকটাই কমে যায় ৷ যার নমুনা ইতিমধ্যেই মিলতে শুরু করে দিয়েছে ৷ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সমস্য়া কমছে ৷ সাধারণ চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও হাসপাতালে ভর্তি করানোর মতো পরিস্থিতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আর তৈরি হচ্ছে না ৷
তবে, চিকিৎসকদের এই আশ্বাসবাণীর মধ্যেও ভয় ধরাচ্ছে শিশুমৃত্যুর পরিসংখ্যান ৷ তথ্য বলছে, গত দু'মাসে রাজ্যে অন্তত 123টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে (Children Death in West Bengal) ৷ অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ছাড়াও অধিকাংশ শিশুরই মৃত্যু হয়েছে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যার কারণে ৷ এমনকী, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কলকাতার বি সি রায় হাসপাতালে দু'টি এবং মেডিক্যাল কলেজে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে ৷
এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে চিকিৎসকরা জানান, একদিকে ইনফ্লুয়েনজা জাতীয় সমস্যা এবং অন্যদিকে অ্যাডিনো ভাইরাসের দাপট ৷ এই দুই কারণেই হাসপাতালগুলিতে বাচ্চাদের ভর্তি করার সংখ্যা হু হু করে বেড়ে গিয়েছে ৷ অনেকেরই অ্যাডিনো ভাইরাস নির্ণায়ক পরীক্ষার রিপোর্ট 'নেগেটিভ' এলেও তারা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রাণ হারিয়েছে ৷
বেসরকারি সূত্রের দাবি, গত দু'মাসে রাজ্যে অন্তত 123টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে ৷ যার মধ্যে সবথেকে বেশি শিশু মারা গিয়েছে ফুলবাগানের বি সি রায় হাসপাতালে ৷ এখানে অন্তত 50টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে ৷ অন্যদিকে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা অন্তত 20 ৷ আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন প্রাণ হারাতে হয়েছে 28টি শিশুকে ৷ চিত্তরঞ্জন শিশু সদনে মৃত্যু হয়েছে আরও 10টি শিশুর ৷ ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে মৃত্যু হয়েছে সাতটি শিশুর ৷ এছাড়াও জেলার বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্র এবং রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে মৃত্যু হয়েছে আরও বহু শিশুর ৷
আরও পড়ুন: পোলবায় অ্যাডিনো ভাইরাসের বলি 9 মাসের সুস্মিতা ? হাসপাতালের দাবি, নিউমোনিয়া
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অগ্নিমিত্রা গিরি সরকার এই প্রসঙ্গে বলেন, "প্রতিবছরই আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় বিভিন্ন ভাইরাসের উৎপত্তি হয় ৷ এবারে তার মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসের একটি স্পেশাল স্ট্রেন পরিস্থিতি জটিল করে তোলে ৷ বিশেষ করে 2 বছরের কম বয়সি শিশুদের উপর এই ভাইরাসের প্রভাব সবথেকে বেশি লক্ষ করা গিয়েছে ৷ ওই সময় আমরা বাবা-মায়েদের সতর্ক হতে বলেছি ৷ শিশুর শ্বাসকষ্ট হলেই তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে, কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছি ৷" একইসঙ্গে, ড. অগ্নিমিত্রা গিরি সরকার জানিয়েছেন, গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে ৷ আগামী কিছু সময়ের মধ্যে সমস্যা সম্পূর্ণ মিটে যাবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি ৷