কলকাতা, 7 মে: গত মাসে রাজ্য সফরে এসে লোকসভা ভোটে বিজেপির জন্য 35 আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছিলেন অমিত শাহ ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা অমিত শাহর এই ঘোষণার পালটা লোকসভা ভোটে চল্লিশটি আসনের লক্ষ্যমাত্রা দলের নেতা-কর্মীদের জন্য বেঁধে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মুর্শিদাবাদের সভা থেকে এই ঘোষণা করেন তিনি ৷
লোকসভা নির্বাচনের আগে এখনও প্রায় এক বছর বাকি ৷ কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে লোকসভার ভোট প্রস্তুতিতে শান দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে শাসক থেকে বিরোধী দুই পক্ষই । রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি যখন এই রাজ্য থেকে লোকসভায় 35টি আসনের লক্ষ্যে পঞ্চায়েত ভোট থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছে, ঠিক তখন তৃণমূল চেষ্টা করছে নিজেদের দুর্বল জায়গাগুলিতে ক্ষত মেরামত করে সাংসদ সংখ্যা বাড়িয়ে নিতে ৷ আর সে কারণেই অভিষেকের দেখানো লক্ষ্যমাত্রাকে কার্যত সঠিক আখ্যা দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা ।
এই প্রসঙ্গে রবিবার রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা শশী পাঁজা বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক যে কথা বলেছেন তার মধ্যে কোনও অত্যুক্তি নেই ৷ 365 দিন মানুষের পাশে থাকে তৃণমূল কংগ্রেস । তাঁদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, ভালো-মন্দ নিয়ে কাজ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। গত বিধানসভা নির্বাচনে যেভাবে রাজ্যের মানুষ দু'হাত খুলে তৃণমূলকে আশীর্বাদ করেছে তাতে আমরা আশা করতেই পারি একইভাবে তারা লোকসভা নির্বাচনেও আমাদের সমর্থন করবেন । আর সেই জায়গা থেকেই এই লক্ষ্যমাত্রা । কোনও নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করছি না আমরা । বরং লক্ষ্য সামনে রেখে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি ।"
অন্যদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যে আতঙ্কের ছাপ দেখতে পাচ্ছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, অমিত শাহকে স্বপ্নে দেখতে পারছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । একটা আতঙ্ক তাড়া করছে তাঁকে । অমিত শাহর ছায়া চেতন-অবচেতন মনে ওদের গ্রাস করে ফেলেছে। আর সে কারণে তাকেই অনুকরণ করার চেষ্টা করছেন অভিষেক। গত বছরও তৃণমূল কংগ্রেস বলেছিল 42 শে 42, বিজেপি ফিনিশ । মানুষ তাদের এই স্লোগানকে ভুল প্রমাণ করেছিল । এবারও তাই প্রমাণিত হবে ।
আরও পড়ুন: আইনস্টাইনের আগে ভারতই ভর-শক্তি সম্পর্কের কথা বলেছিল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি ঘিরে বিতর্ক
তবে এই বিষয়ে বিজেপি ও তৃণমূল দুই দলকেই কটাক্ষ করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী । তিনি বলেন, "2019 সালে 42 বলেছিল এবার 42 বললো না কেন । তৃণমূল কংগ্রেস আসলে ধরা পড়ে গিয়েছে । দিল্লিতে বিজেপিকে পার্লামেন্ট ছেড়ে দিতেই চায় তৃণমূল । আর বিজেপি বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়ে চলতে চায় । এটাই ওদের বোঝাপড়া ।" প্রসঙ্গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এবার তাৎপর্যপূর্ণভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে লোকসভা ভোট । পঞ্চায়েত থেকে লোকসভার ঢাকে কাঠি প্রায় পড়ে গিয়েছে বললেই চলে । আর তাই চড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপও ।