কলকাতা, 16 অগস্ট: গত দু'বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার ভালোই বরাত পেয়েছেন কুমোরটুলির শিল্পীরা ৷ কিন্তু কাঁচামালের দাম আকাশছোঁয়া (Price of Raw Materials) ৷ তাই লাভের মুখ দেখা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন শিল্পীরা (Kumartuli Potters) ৷
আগের দু'বছরের স্মৃতি মনে করতে চাইছেন না শিল্পী থেকে কারিগর কেউই। সেই খারাপ সময় বোধহয় কারও আসেনি। প্রতিমার অর্ডার এসেছিল কোনওমতে (Durga Puja 2022) ৷ সামান্য লাভ রেখে প্রতিমা বানেতে হয়েছিল শিল্পীদের। তখন একচালা ঠাকুরেরই বেশি অর্ডার এসেছিল। উচ্চতা 10-12 ফুট তার বেশি বড় ঠাকুর খুব কম কমিটি নিয়েছে। এবার 12-15 ফুট ও তার থেকে বেশি উচ্চতার ঠাকুর অর্ডার করেছে বহু কমিটি।
কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সমিতির দাবি, গত বছরে সব মিলিয়ে কম বেশি 3 হাজার 200টি ঠাকুর অর্ডার ছিল। যার মধ্যে প্রায় 2 হাজার 500টি প্রতিমা ছিল বারোয়ারি পুজোর। বাকি 700টি বাড়ির পুজোর। এবার সেই সংখ্যা বেড়েছে। এবার 4 হাজার 500টিরও বেশি প্রতিমার অর্ডার এসেছে। এর মধ্যে 3 হাজার 200টি মতো বারোয়ারি পুজো। বাকি বাড়ির পুজো। বিগত বছরগুলোর থেকে এবার প্রতিমার দামও বেড়েছে। তবে তার পরেও লাভের পরিমাণ আশানুরূপ হয়নি শিল্পীদের। কারণ কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি।
আরও পড়ুন: ট্রামের আদলে চায়ের দোকান কুমোরটুলিতে, মন কাড়ছে চা-প্রেমীদের
শিল্পীদের কথায়, ঠাকুর তৈরির সমস্ত ধরনের সরঞ্জামের দাম এক ধাক্কায় দ্বিগুণ হয়েছে। তাই দু'বছর বাজার খারাপের পরে আবার যে পরিমাণ লাভ করার পরিকল্পনা ছিল তা কোনও ভাবেই করা যাচ্ছে না। আগে নৌকায় উলুবেরিয়া থেকে যে মাটি আসত তার এক ভ্যানের দাম ছিল 600 টাকা। এখন সেই মাটি আসে না। এখন যখন সড়ক পথে লরিতে করে দক্ষিণ 24 পরগনার ডায়মন্ড হারবার, বকখালি, কাকদ্বীপ থেকে জমি কাটা মাটি এনে কাজ করতে হচ্ছে। সেই এক ভ্যান মাটির দাম দাঁড়াচ্ছে প্রায় 1 হাজার 200 টাকা।
দাম বেড়েছে কাঠেরও। আগে প্রতি কুইন্টাল কাঠের দাম ছিল 2000-2500 টাকা। এখন সেই কাঠ কিনতে হয়েছে 3000-3200 টাকায়। দড়ি 90 কেজি ছিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে 130 টাকা। খড় 180 টাকা ছিল 5 বান্ডিলের দাম। এখন হয়েছে 350 টাকা। বাঁশ প্রতি 100-120 টাকা ছিল। এখন কিনতে হচ্ছে 200-220 টাকা। এই বাঁশ আগে বিভিন্ন জেলা থেকে জল পথে এলেও এখন আর আসে না। তাই বরানগর থেকে আনতে হয়।
আরও পড়ুন: করোনার প্রকোপ কাটিয়ে ছন্দে ফিরছে কুমোরটুলি
এত গেল কাঁচামাল। গত দু'বছর অনেক কম মজুরিতে কাজ করেছেন কারিগররা। এবার পুরোনো মজুরির 10-20 শতাংশ বৃদ্ধি করতে হয়েছে। ফলে লাভের যে অঙ্ক আশা করা হয়েছিল তার ধার কাছে পৌঁছনো যায়নি।