কলকাতা, 7 অক্টোবর : উমা মন্ডপে গেলেই ঘর আলো হয় ওঁদের । সারা বছরের প্রতিক্ষা, কয়েকমাসের হাড় ভাঙা খাটুনির পর হাতে আসে বেঁচে থাকার রসদ । মূর্তি গড়ে টাকা রোজগারই ওঁদের পেশা । তবু মহালয়া এলে মনখারাপ হয় কুমোরটুলির । বিয়ের সময় মেয়েকে শ্বশুর বাড়ি পাঠানোর মুহুর্তে বাবা-মা যেমন চোখের জল ফেলেন, উমা কুমোরটুলি ছাড়ার সময় একই রকম যন্ত্রনায় বুক ফেটে যায় মৃৎশিল্পীদের । তবু কান্না চেপে হাসি মুখেই উমাকে মন্ডপের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেন ওঁরা । এটাই ওঁদের বারামাস্য । এটাই ওঁদের জীবন । কুমোরটুলির গুমোট মনখারাপ করা দৃশ্য লেন্স বন্দি করল ইটিভি ভারত ।
মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয় উমার মন্ডপযাত্রা ৷ কুমোরটুলি থেকে এক এক করে মা দুর্গা পাড়ি দেয় মন্ডপের উদ্দেশে ৷ দিন রাত পরিশ্রম করে একজন মৃৎশিল্পী কাদার তালকে মাতৃমূর্তির রূপ দেন ৷ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেই মূর্তির সঙ্গে ওঠাবসা ৷ তাকে সুন্দর করে সাজিয়ে পুজো কমিটির হাতে তুলে দেওয়ার সময় কন্যা বিদায়ের মতোই বিষাদ ছড়িয়ে পড়ে কুমোরটুলি জুড়ে ৷
মৃৎশিল্পী সঞ্জয় হালদার, অজয় মাইতি ও ইন্দ্রজিৎ পালের কথায়, "এই যে মূর্তিগুলিকে এতদিন ধরে তৈরি করার পর সেগুলো নিয়ে চলে গেলে মনটা তো একটু খারাপ লাগবেই । একে একে সব মূর্তি চলে যাওয়ায় ঘর ফাঁকা হতে শুরু করে । এটা ঠিক বাবা যখন মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি পাঠায় সেই রকম অনুভূতি ৷ কিন্তু কিছু করার নেই ৷ তবে নিজের তৈরি মূর্তি আবার যখন পুজো মন্ডপ আলোকিত করে, তখন মনটা ভরে যায় ৷"
আরও পড়ুন : Mahalaya: প্রতিমার চক্ষুদানে দেবীপক্ষের সূচনা, তর্পণে চলছে পুণ্য অর্জন