কলকাতা, 3 মার্চ: দিল্লি যাত্রা আটকাতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ 'কেষ্ট' ৷ বৃহস্পতিবার সকালে এ বিষয়ে বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তৃণমূল নেতার আইনজীবী ৷ বৃহস্পতিবার আসানসোলের সিবিআই আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল ৷ এদিন অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত । বিচারক বিবেক চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামিকাল স্পেশাল বেঞ্চ গঠন করে শুনানি হবে ।
এর আগে ইডি অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানালেও তাতে সম্মতি দেয়নি আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত ৷ এ নিয়ে ইডি দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন জানায় ৷ দিল্লির আদালতে সেই মামলা চলছে ৷ ইডির মামলার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল ৷ তার শুনানি আগামী 17 মার্চ ৷ এরই মধ্যে তাঁর হাজিরা নিশ্চিত করতে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট নতুন করে একটি সমন জারি করে ৷ তার পরিপ্রেক্ষিতে আসানসোল আদালতে ফের আবেদন জানায় ইডি ৷ বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ইডির অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সম্মতি জানায় ৷ তাই গতকাল রাতে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির দিল্লি যাওয়া একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় ৷
সিবিআই আদালতের এই সম্মতির বিরুদ্ধে আজ তড়িঘড়ি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অনুব্রত ৷ দিল্লি যাওয়া রুখতে শুক্রবার সকালে তাঁর আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ৷ আপাতত এটা দেখার, মামলার শুনানির আগে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে আদলত কোনও বিশেষ নির্দেশ দেয় কি না ৷ অন্যদিকে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাবা প্রখ্যাত ব্যারিস্টার ও এক সময়ের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জুলু মুখোপাধ্যায়ের জীবনাবসান হওয়ায় আদালতে মামলার শুনানি স্থগিত হয়েছে ৷ শুধু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জরুরি ভিত্তিক মামলার শুনানি হচ্ছে ৷ তাই অনুব্রত মণ্ডলের মামলাটির শুনানির সময় এগিয়ে 2টোয় হওয়ার কথা ৷
আরও পড়ুন: অনুব্রতর 115টি বাফার অ্যাকাউন্টের নথি আদালতে জমা দিল সিবিআই
11 অগস্ট গরুপাচার মামলায় বীরভূমের বোলপুরে নিজের বাড়ি থেকে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন অনুব্রত ৷ এরপর তাঁর নতুন ঠিকানা হয় আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগার ৷ বারে বারে জামিনের আবেদন নাকচ হতে থাকে ৷ এর মধ্যে আয়-বহির্ভূত সম্পত্তি ও আর্থিক তছরূপের অভিযোগে ইডিও তাঁকে গ্রেফতার করে ৷ গত ডিসেম্বরে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি ৷ সে যাত্রায় অন্য কৌশলী কারণে তাঁর দিল্লি যাওয়া হয়ে ওঠেনি ৷ বীরভূম জেলা তৃণমূলের সদস্য শিবঠাকুর মণ্ডল তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে এফআইআর করে ৷
বালিঝুড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানের অভিযোগ ছিল, 2021 সালে তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন ৷ তখন দুবরাজপুরে দলীয় কার্যালয়ে তাঁকে ডেকে পাঠান জেলা সভাপতি অনুব্রত ৷ দল ছাড়ার কারণ জানতে চান ৷ এর মধ্যে দু'পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয় ৷ সেই সময় নাকি অনুব্রত শিবঠাকুরের গলা টিপে ধরেছিলেন বলে অভিযোগ ৷ 20 ডিসেম্বর খুনের মামলায় অনুব্রতকে গ্রেফতার করে দুবরাজপুর থানার পুলিশ ৷ এতে অনুব্রতর হাজতবাস হয় ৷ কিন্তু দিল্লি অবধি যেতে হয়নি ৷
আরও পড়ুন: স্বেচ্ছায় অনুব্রতর নামে অভিযোগ শিবঠাকুরের ! গাড়িতেই স্বাস্থ্যপরীক্ষা বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির