কলকাতা, 22 এপ্রিল: তাপপ্রবাহের দাপটে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। গরম এড়াতে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে একাধিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এই গরমে এই পরিস্থিতিতে শুধু মানুষ নয়, প্রাণহানি হয়েছে বেশ কিছু পথ সারমেয়র। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া পথ সারমেয়র সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি তাপপ্রবাহের ধাক্কায় কলকাতার নানা প্রান্তে প্রায় 15 থেকে 20টি পথ কুকুরের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি অসুস্থ হয়েছে প্রায় 100। পশুপ্রেমীদের আবেদন গরমের তপ্ত দুপুরে ওদের একটু আশ্রয় দেওয়া ও জলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক ৷
তাপপ্রবাহের জেরে চিকিৎসকরা পরমার্শ দিয়েছেন বাইরে রোদ এড়িয়ে চলতে। বাইরে রেরোলেও ছাতা ব্যবহার ও চোখে সানগ্লাস রাখতে ৷ নুন ও চিনি মেশানো জল খেতে বলা হচ্ছে। কিন্তু এত ব্যবস্থা মানুষের ক্ষেত্রে থাকলেও এই একই গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার জোগাড় মহানগর-সহ বিভিন্ন জেলার অলিগলিতে ঘুরে বেড়ানো পথ সারমেয়দের। ওদের অবস্থা আরও খারাপ। রাস্তার চড়া রোদে পিঠ পুড়ে যাওয়ার জোগাড়, নালা-নর্দমা শুকিয়ে কাঠ। যেদিকে চোখ যায় ছিটে ফোঁটা জল নেই। নেই ঠান্ডা ছায়া।
উত্তর কলকাতার অলিগলি, পুরনো বাড়ির নীচে, সিঁড়িতে, গেটের পাশে তবু কিছু জায়গা মিললেও শহর জুড়ে ফ্ল্যাট সংস্কৃতিতে পথ সারমেয়দের ঢোকার অনুমতি নেই সেই সমস্ত বহুতলের চৌহদ্দির মধ্যে। দেখলেই নিরাপত্তা কর্মীরা ছুটে যান তাড়াতে। ফলে ছায়া, জলের অভাবে পথ সারমেয়রা গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মারাও গিয়েছে। নাক থেকে রক্ত পড়ছে, ঝিমিয়ে পড়ছে, বমিও করছে অনেক পথ সারমেয়। পশুপ্রেমী সংগঠন বা সারমেয় প্রেমীরা এক্ষেত্রে এগিয়ে এলেও সরকারিভাবে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: কীটনাশক খাইয়ে 7টি পথ সারমেয় মারার অভিযোগে প্রতিবাদ স্থানীয়দের
কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, রোগ ঠেকাতে পথ সারমেয়দের নির্বীজকরণ করা ও টিকাকরণ করা ছাড়া কিছুই করার নেই। পথ সারমেয়দের চিকিৎসা করার পরিকাঠামো নেই । রাজ্যের প্রাণী সম্পদ দফতরের তেমন কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি বলেই অভিযোগ সারমেয় প্রেমীদের।
সারমেয় প্রেমী কলকাতা কর্পোরেশনের 70 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসীম বসু নিজের ওয়ার্ডজুড়ে পথ সারমেয়দের জল খাওয়ার জায়গা তৈরি করছে ব্যক্তিগত উদ্যোগে। তাঁর আবেদন, এই গরমে বাড়ির নীচে ছায়া আছে এমন জায়গায় একটু আশ্রয় দিন এই অবলা প্রাণীগুলোকে। তারা আমাদের ক্ষতি করে না বরং উপকার করে এলাকা পাহারা দেয়। তাদের জন্য পারলে এলাকায় বেশ কিছু জায়গায় জলের ব্যবস্থা করুন যাতে তপ্ত দুপুরে জলের অভাব বোধ না-করে এই সারমেয়রা।