কলকাতা, 31 জুলাই: এসএসসি-সহ একাধিক দুর্নীতির ক্ষেত্রে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারের দাবিতে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করেন বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা । সেই বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন চিত্র পরিচালক অনীক দত্ত (Anik Dutta got Angry After Hearing Questions) । ছিলেন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা । সিপিএমের মুখপত্র 'গণশক্তি', তৃণমূলের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'র এক সাংবাদিকও উপস্থিত । প্রথম থেকেই বেশ ভালোভাবেই বৈঠক চলছিল । কিন্তু, জাগো বাংলার সাংবাদিকের প্রশ্ন শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অনীক দত্ত । তাল কেটে যায় সাংবাদিক সম্মেলনের । ধমক দিয়ে সাংবাদিককে চুপ করানোর চেষ্টা করেন ।
অন্যদিকে এই ঘটনায় নিন্দায় সরব হয়েছেন অনেকেই ৷ সামাজিক মাধ্যমে অনেককেই প্রতিবাদে সরব হতে দেখা গিয়েছে ৷ সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ এরকমও বলেছেন, অনীক না কি আগেও এ ধরনের আচরণ করেছেন ৷ ঠিক কী হয়েছিল ? বৈঠকের প্রথম থেকেই অভিনেতা দেবদূত ঘোষ, শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার, রাহুল অরুণাদায় বন্দোপাধ্যায়, সিপিএম সংসদ তথা আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যেরা ধাপে ধাপে বক্তব্য রাখেন । এভাবেই প্রায় এক ঘণ্টা যাওয়ার পর অনীক দত্তের আচরণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় । বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য প্রাথমিক বক্তব্য রাখার পর 'জাগো বাংলা'র এক সাংবাদিক তাঁর কাছে বাম আমলের 'অনিলায়ন' বিতর্ক ও হোল টাইমারদের চাকরি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন । প্রশ্নের উত্তরে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "আপনি যে অভিযোগের কথা বললেন সবগুলোই মিথ্যা । এরকম অভিযোগ আগেও হয়েছে । একটাও প্রমাণ হয়নি ।"
আরও পড়ুন : নতুন গান থেকে রাজনীতি, ইটিভি ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনের জানালা খুলে দিলেন বাবুল
মূলত বিনোদন জগতের উদ্দেশ্যে 'জাগো বাংলা'র সাংবাদিক আরও একটি প্রশ্ন করেন যে, আপনার যে কথা আজ বলতে সাংবাদিক সম্মেলন করছেন সেটা কেন সিপিএমের মঞ্চ থেকে বলতে দেখা যায় না । পাশাপাশি বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁকে সেভাবে কথা বলতে দেখা যায় না কেন সেটাও জানতে চান সাংবাদিক ? প্রশ্ন শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অনীক দত্ত । বিকাশবাবুর থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে সাংবাদিকের পরিচয় জানতে চান । জাগো বাংলা সাংবাদিক তাঁর পরিচয় জানান । এরপরে আঙুল উচিয়ে অনীক দত্তকে বলতে দেখা যায়, "আমার ফেসবুক দেখুন । কী বলতে চান আমি বিজেপির দালালি করি? একদম চুপ?"
পাল্টা 'জাগো বাংলা'র সাংবাদিকও প্রশ্ন তোলেন "জাগো বাংলা'য় চাকরি করি তাতে সমস্যা কোথায়?" ফের অনীক দত্তকে বলতে দেখা যায়, "জাগো বাংলায় চাকরি করেন আবার বড় বড় কথা । একদম চুপ করে থাকুন ।"
আরও পড়ুন : দেখে নিন টেলি অভিনেত্রী হেলি শাহের কিছু ঝলক, যা নেটমাধ্যমের 'অলি-গলি' ঘুরে বেড়াচ্ছে
এ কথা শোনার পরে বাকি অংশের সাংবাদিকরা হই হই করে ওঠেন । তাঁরা কার্যত একযোগে অনীকবাবুর উদ্দেশ্য বলেন, "সাংবাদিক হিসেবে কে কোথায় চাকরি করবে সেটা আপনি ঠিক করে দিতে পারেন না । আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে ৷ আপনি ভুল করেছেন ৷"
যদিও অনিক দত্ত নিজের দাবিতে অনড় থেকে ক্ষমা চাইতে নারাজ থাকায় শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতির সামাল দিতে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে ক্ষমা চান ৷ অনেকেই মনে করেন ভুল বলেছেন অনিক দত্ত । সেক্ষেত্রে বিকাশবাবু কেন ক্ষমা চাইবেন ? ক্ষমা চাইতে হলে অনীক দত্তকে চাইতে হবে । যদিও শেষ পর্যন্ত অনীক দত্ত ক্ষমা চাননি । আর তা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছে সব মহল ৷