কলকাতা, 8 জুন: রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেও সৌজন্যের নয়া নজির গড়লেন দেশের দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ রাজনীতিবিদ ৷ একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল ৷ হালে ওড়িশার রেল দুর্ঘটনা নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত বিজেপির বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত হয়েছেন ৷ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকেও আক্রমণ করেছে তৃণমূল ৷ এই আবহেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলার আম পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তৃণমূল, বিজেপি উভয়েই অবশ্য এই বিষয়টিকে রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে দেখতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করছে ৷
ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবারও সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ বারবারই তিনি জানিয়েছেন, যেখানে এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সেখানে তিনি চাইছেন সঠিক সত্য সামনে আসুক। ঠিক তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলার আম পাঠালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার সেরা আম বেছে বেছে পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে ৷ আদতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে যতই রাজনৈতিক বৈরিতা থাকুক, সৌজন্যের ক্ষেত্রে কিন্তু কোনও খামতি রাখতে চান না মমতা-মোদি উভয়ই। আর তাই আম ঝুড়িতে মুড়ে তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে দিল্লির 7 লোক কল্যাণ মার্গের ঠিকানায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, একা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নন, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কেও আম পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
একইসঙ্গে, তিন জায়গাতেই মুখ্যমন্ত্রী পাঠিয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তাও। জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো আমের তালিকায় রয়েছে বাংলার সেরা লক্ষণ ভোগ, ফজলি এবং হিমসাগর আম। এ বছরই প্রথম নয়, প্রত্যেক বছরই নিয়ম করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী-সহ একাধিক বিশিষ্ট মানুষদের আম পাঠান। এটা তাঁর বহুদিনের সৌজন্যের একটা অনন্য নিদর্শন বলেই জানাচ্ছেন নবান্নের আধিকারিকরা। 2011 সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী-সহ বিশিষ্টদের নিয়ম করে আম ও পুজোর সময় উপহার পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লিতে বঙ্গভবন হয়ে এই সমস্ত জিনিস সরাসরি পৌঁছে যায় নির্দিষ্ট ঠিকানায় ৷ সেইমতো এবারও আম পাঠানো হয়েছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: অভিযোগ এলে গড়িমসি চলবে না, আধিকারিকদের কড়া হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর
প্রসঙ্গত, এদিন কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের অবহে আম পাঠানো নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র তাপস রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "সব কিছুতে রাজনীতি খোঁজা ঠিক হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরে এই সৌজন্যের নজির রাখছেন। এটা প্রথম বার নয়, প্রতিবছরই পাঠান। তাই আলাদা করে এ নিয়ে কী বলার আছে ?" প্রায় একই কথা শোনা গিয়েছে বিজোপি নেতা রাহুল সিনহার গলাতেও ৷ তিনি বলেন, "প্রতি বছরই তিনি পাঠান ৷ এটা নতুন কিছু নয় ৷ রাজনীতির সঙ্গে এটা গুলিয়ে ফেললে চলবে না ৷ এটা আমরা সৌজন্য হিসাবেই দেখছি ৷"