কলকাতা, 19 এপ্রিল : রাজ্যে ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের গ্রাফ । এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগামীকাল থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল ফের অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল সরকার । দীর্ঘ 11 মাস বন্ধ থাকার পর গত 12 ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল স্কুলের দরজা । কিন্তু করোনা পরিস্থিতি বেলাগাম হতেই ফের স্কুল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল ।
আসলে করোনা পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে কোনওভাবেই ঝুঁকি নিতে চাইছে না রাজ্য সরকার । বিশেষ করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শিকার হচ্ছে পড়ুয়ারাও । তাই আগেভাগে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে এই ব্যবস্থা নিল রাজ্য । এদিন এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, যেভাবে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আমরা কোনওভাবেই পড়ুয়াদের জীবন নিয়ে ঝুঁকি নিতে পারি না । সব দিক বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
গত বছর মার্চ মাস থেকেই বন্ধ রয়েছে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । তবে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস চালু করা হয়েছিল । কিন্তু পরিস্থিতি জটিল হতেই ফের স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত । এখনও গরমের ছুটি পড়েনি । এক্ষেত্রে সেই ছুটিই এগিয়ে আনা হল বলে জানানো হচ্ছে । যে ভাবে চারিদিকে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তাতে স্কুল খুলে রাখা ঠিক বলে মনে করছে না রাজ্য সরকার । সম্ভবত আজই এই বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে । ফলে নবম থেকে দ্বাদশের সমস্ত ক্লাসই বন্ধ হয়ে যাবে । শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও স্কুলে আসতে হবে না । এ প্রসঙ্গে গরমের ছুটি এগিয়ে আনার কথা বলা হলেও, যতদিন না কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, ততদিন স্কুল বন্ধ থাকবে । শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি না দেওয়া পর্যন্ত এই ছুটি বহাল থাকবে ।
আরও পড়ুন, ভয়ংকর হচ্ছে করোনা, আজ ফের বৈঠকে মোদি
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় রাজ্যের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে পঠন-পাঠন শুরু হয়েছিল । ইতিমধ্যেই দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা বাতিল করেছে সিবিএসই । স্থগিত করা হয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষাও । পিছানো হয়েছে জেইই মেন । তবে রাজ্যে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি । কারণ এই দু'টি পরীক্ষা রয়েছে জুন মাসে । এদিকে, রাজ্যে একদিনে আক্রান্ত 8 হাজার পার করেছে । শিক্ষক-শিক্ষিকারাও আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিডে । সকলের মধ্যেই একটা আতঙ্ক কাজ করছে । এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের জীবনকেই আগে গুরুত্ব দেওয়া হল । এদিকে, মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ''এই মুহূর্তে সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি যেভাবে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই সিদ্ধান্ত যুক্তিযুক্ত বলেই আমার মনে হয়েছে ।''