ETV Bharat / state

Alipore Zoo Appeal on Diwali: আলোর উৎসবে জীবজন্তুদের কষ্ট না দেওয়ার আবেদন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের - আলিপুর চিড়িয়াখানা

Alipore Zoo Authority Appeals to People: শীত পড়তেই দূষণ বাড়ছে ৷ এবার তাতে সংযোজন হতে চলেছে কালীপুজো ও দীপাবলির বাজির ধোঁয়া ৷ সঙ্গে শব্দদানবের দাপট ৷ এসবই সমূহ ক্ষতি করে সমস্ত প্রাণীকূলের ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 11, 2023, 9:50 PM IST

Updated : Nov 11, 2023, 10:44 PM IST

আলোর উৎসবে জীবজন্তুদের কষ্ট না দেওয়ার আবেদন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের

কলকাতা, 11 নভেম্বর: প্রাণীকূলকে বাঁচাতে বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণ রোধে ‘আমি বাজি পোড়াবো না ও অন্যকেও বাজি পোড়াতে দেব না' , এই অঙ্গীকারে আবদ্ধ হতে আবেদন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের ৷ কারণ, বাজির ধোঁয়ায় বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন এবং সালফার-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ৷ মাটিতে মেশে পটাশিয়াম কার্বনেট, সালফেট ও অবিকৃত সালফার ৷ অন্যান্য আতশবাজি থেকে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, লেড, কপার, সোডিয়াম ও ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী মৌল মাটি ও বাতাসে মেশে ৷ সঙ্গে শব্দদানবের দাপট এবং বাজির চোখ ঝলসানো আলো, যা প্রাণীকূলের জন্য প্রাণনাশী ৷

শব্দবাজির তাণ্ডব ও তার ভয়াবহতা কতটা মারাত্মক হতে পারে, সম্প্রতি ইডেন গার্ডেন্সে বিশ্বকাপের ম্যাচে দেখা গিয়েছে ৷ কলকাতা মাউন্টেড পুলিশের ঘোড়ার মৃত্যুর ঘটনা অন্যতম উদাহরণ ৷ তাই দীপাবলির আলোর উৎসবকে শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণে পরিণত না করার আবেদন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের ৷ চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর আইএফএস শুভঙ্কর সেনগুপ্ত ইটিভি ভারতকে বলেন, "চিড়িয়াখানার ক্যাম্পাসের ভিতরে বাজি পোড়ানো বা ফাটানো সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ৷ এমনকি আলোর উৎসব হলেও, সেভাবে চিড়িয়াখানায় আলো লাগানো হয় না ৷ কারণ, জীবজন্তুর নানান রকম সমস্যা হয় ৷ জীবজন্তু প্রাণ রক্ষা করা আমাদের অন্যতম কাজ ৷"

কিন্তু, রাস্তাঘাটে বা চিড়িয়াখানার আশেপাশে তো আকছাড় বাজি পোড়ানো বা শব্দবাজি ফাটানো হয় ৷ যা নিয়ে ডিরেক্টরের বক্তব্য, "চিড়িয়াখানার বাইরে রাস্তায় কেউ বাজি ফাটালে বা বাজি পোড়ালে আমাদের কিছু করার থাকে না ৷ তার দূষণ তো ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলেই ৷ তাই স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তো বটেই, সাধারণ নাগরিকের কাছেও আবেদন বাজি পোড়ানো বা ফাটানো থেকে দূরে থাকুন ৷ আলোর উৎসবে সকলে শামিল হন ৷" কিন্তু, বেপরোয়া লোকজন যারা শব্দবাজি ব্যবহার করবেন, তাদের বিরুদ্ধে যাতে করা পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তার জন্য সরকার এবং প্রশাসনিক স্তরে আবেদন জানানোর কথা বলেন আলিপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর ৷

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ মহাপাত্র বলেন, "ল্যানসেট পত্রিকায় 2019 সালের সমীক্ষায় বলা হয়েছিল- দূষণের কারণে ভারতে 23 লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে ৷ 'এনভায়রনমেন্ট পারফরম্যান্স ইনডেক্সে' ভারত 180টি দেশের মধ্যে সবার শেষে ! এমন হলে এই কঠিন পরিস্থিতিতে দেশ কীভাবে পরিবেশের সংকটের সঙ্গে মোকাবিলা করবে ? গত বছর পৃথিবীর দু’টি দূষিততম শহরের নাম ছিল দিল্লি আর কলকাতা ৷" তিলোত্তমার 'এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স' 200-র কাছাকাছি ৷ যা খারাপ ৷

তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন যে, পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শব্দবাজি ফাটানোর মাত্রা 90 ডেসিবেল থেকে বাড়িয়ে 125 করে দিয়েছে ৷ কলকাতার দূষণ নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক পদক্ষেপ আশা করেছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তা করেনি বলে অভিযোগ প্রদীপ মহাপাত্রর ৷ এখন সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না বলে জানান তিনি ৷ তাই সরকার, সাধারণ মানুষ এবং গণমাধ্যমগুলির কাছে বিজ্ঞান মঞ্চের আবেদন, বাজি সংক্রান্ত আইন এবং নিয়ম-কানুন যাতে মানা হয় সেইভাবে নজরদারি চালানো হোক ৷ উল্লেখ্য, শীত পড়ার আগেই যে হারে দূষণ বাড়ছে, তাতে শব্দ ও আতসবাজি দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি করবে ৷

আরও পড়ুন:

  1. সবুজ বাজিতে 30-40% কম হবে বায়ু ও শব্দ দূষণ, দাবি পরিবেশ বিজ্ঞানীর
  2. দূষণ থেকে বাঁচতে পান করতে পারেন এই পানীয়
  3. দিল্লির বিষবায়ু মোকাবিলায় 'কৃত্রিম বৃষ্টি' আনছে আইআইটি-কানপুর, বিষয়টা কী ?

আলোর উৎসবে জীবজন্তুদের কষ্ট না দেওয়ার আবেদন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের

কলকাতা, 11 নভেম্বর: প্রাণীকূলকে বাঁচাতে বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণ রোধে ‘আমি বাজি পোড়াবো না ও অন্যকেও বাজি পোড়াতে দেব না' , এই অঙ্গীকারে আবদ্ধ হতে আবেদন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের ৷ কারণ, বাজির ধোঁয়ায় বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন এবং সালফার-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ৷ মাটিতে মেশে পটাশিয়াম কার্বনেট, সালফেট ও অবিকৃত সালফার ৷ অন্যান্য আতশবাজি থেকে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, লেড, কপার, সোডিয়াম ও ক্যাডমিয়ামের মতো ভারী মৌল মাটি ও বাতাসে মেশে ৷ সঙ্গে শব্দদানবের দাপট এবং বাজির চোখ ঝলসানো আলো, যা প্রাণীকূলের জন্য প্রাণনাশী ৷

শব্দবাজির তাণ্ডব ও তার ভয়াবহতা কতটা মারাত্মক হতে পারে, সম্প্রতি ইডেন গার্ডেন্সে বিশ্বকাপের ম্যাচে দেখা গিয়েছে ৷ কলকাতা মাউন্টেড পুলিশের ঘোড়ার মৃত্যুর ঘটনা অন্যতম উদাহরণ ৷ তাই দীপাবলির আলোর উৎসবকে শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণে পরিণত না করার আবেদন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের ৷ চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর আইএফএস শুভঙ্কর সেনগুপ্ত ইটিভি ভারতকে বলেন, "চিড়িয়াখানার ক্যাম্পাসের ভিতরে বাজি পোড়ানো বা ফাটানো সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ৷ এমনকি আলোর উৎসব হলেও, সেভাবে চিড়িয়াখানায় আলো লাগানো হয় না ৷ কারণ, জীবজন্তুর নানান রকম সমস্যা হয় ৷ জীবজন্তু প্রাণ রক্ষা করা আমাদের অন্যতম কাজ ৷"

কিন্তু, রাস্তাঘাটে বা চিড়িয়াখানার আশেপাশে তো আকছাড় বাজি পোড়ানো বা শব্দবাজি ফাটানো হয় ৷ যা নিয়ে ডিরেক্টরের বক্তব্য, "চিড়িয়াখানার বাইরে রাস্তায় কেউ বাজি ফাটালে বা বাজি পোড়ালে আমাদের কিছু করার থাকে না ৷ তার দূষণ তো ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলেই ৷ তাই স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন তো বটেই, সাধারণ নাগরিকের কাছেও আবেদন বাজি পোড়ানো বা ফাটানো থেকে দূরে থাকুন ৷ আলোর উৎসবে সকলে শামিল হন ৷" কিন্তু, বেপরোয়া লোকজন যারা শব্দবাজি ব্যবহার করবেন, তাদের বিরুদ্ধে যাতে করা পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তার জন্য সরকার এবং প্রশাসনিক স্তরে আবেদন জানানোর কথা বলেন আলিপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর ৷

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ মহাপাত্র বলেন, "ল্যানসেট পত্রিকায় 2019 সালের সমীক্ষায় বলা হয়েছিল- দূষণের কারণে ভারতে 23 লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে ৷ 'এনভায়রনমেন্ট পারফরম্যান্স ইনডেক্সে' ভারত 180টি দেশের মধ্যে সবার শেষে ! এমন হলে এই কঠিন পরিস্থিতিতে দেশ কীভাবে পরিবেশের সংকটের সঙ্গে মোকাবিলা করবে ? গত বছর পৃথিবীর দু’টি দূষিততম শহরের নাম ছিল দিল্লি আর কলকাতা ৷" তিলোত্তমার 'এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স' 200-র কাছাকাছি ৷ যা খারাপ ৷

তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেন যে, পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শব্দবাজি ফাটানোর মাত্রা 90 ডেসিবেল থেকে বাড়িয়ে 125 করে দিয়েছে ৷ কলকাতার দূষণ নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক পদক্ষেপ আশা করেছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ তা করেনি বলে অভিযোগ প্রদীপ মহাপাত্রর ৷ এখন সাধারণ মানুষ সচেতন না হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না বলে জানান তিনি ৷ তাই সরকার, সাধারণ মানুষ এবং গণমাধ্যমগুলির কাছে বিজ্ঞান মঞ্চের আবেদন, বাজি সংক্রান্ত আইন এবং নিয়ম-কানুন যাতে মানা হয় সেইভাবে নজরদারি চালানো হোক ৷ উল্লেখ্য, শীত পড়ার আগেই যে হারে দূষণ বাড়ছে, তাতে শব্দ ও আতসবাজি দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি করবে ৷

আরও পড়ুন:

  1. সবুজ বাজিতে 30-40% কম হবে বায়ু ও শব্দ দূষণ, দাবি পরিবেশ বিজ্ঞানীর
  2. দূষণ থেকে বাঁচতে পান করতে পারেন এই পানীয়
  3. দিল্লির বিষবায়ু মোকাবিলায় 'কৃত্রিম বৃষ্টি' আনছে আইআইটি-কানপুর, বিষয়টা কী ?
Last Updated : Nov 11, 2023, 10:44 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.