কলকাতা, 27 মার্চ: খাস কলকাতায় নাবালিকাকে অপহরণ এবং পরে 'খুন'। পুলিশি গাফিলতির অভিযোগে উত্তাল রাতের তিলজলা। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার সকাল আটটা নাগাদ তিলজলা থানা এলাকার এক নাবালিকা রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যায়। তাকে পাওয়া যাচ্ছে না এই খবর জানার পরেই নাবালিকার আত্মীয়-স্বজনরা থানার দ্বারস্থ হন (Agitation over A Minor Girl Kidnapped and Murdered)৷
ওই নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ যে, সিসিটিভিতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে তাঁদের মেয়ে পাশের বাড়িতে ঢুকেছে। কিন্তু তারপরেও ওই নাবালিকাকে খুঁজে বার করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। উপরন্তু কোনও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে পরিবার-সহ এলাকার বাসিন্দারা। পাশের একটি ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় একটি সুটকেস। পুলিশ সেই সুটকেস খুললেই চমকে ওঠেন পুলিশ কর্মীরা। কারণ ওই সুটকেসের ভিতর থেকেই উদ্ধার হয় সারাদিন ধরে নিখোঁজ থাকা এলাকার নাবালিকার গলাকাটা দেহ।
মৃত নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ, কেউ বা কারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই নাবালিকাকে প্রথমে অপহরণ করে তারপর পাশের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় তার গলা কেটে খুন করে তাকে সুটকেসের মধ্যে ঢুকিয়ে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে অবশ্য তদন্ত নেমে একজন সন্দেহজনক ব্যক্তিকে আটক করে তিলজলা থানার পুলিশ। রাতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কোনও সদুত্তর না-পাওয়ায় ওই ব্যক্তিকে অবশেষে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এলাকার যে ফ্ল্যাট থেকে ওই নাবালিকার গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়েছে তারই মালিক এই ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: ক্লাসরুমেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার তিন অভিযুক্ত
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তারা গতকাল সকালে স্থানীয় তিলজলা থানায় অপহরণের মামলা রুজু করতে গেলে পুলিশ প্রথম দিকে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। এরপরে ওই নাবালিকা সংশ্লিষ্ট যে ফ্ল্যাটে ঢুকেছিল সেই কথাও এলাকার বাসিন্দারা থানায় জানায়। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ পুলিশকে একাধিকবার বলা সত্ত্বেও কোনও রকমের তদন্তে নামেনি। পাশাপাশি ওই যে ফ্ল্যাটে প্রথমে পুলিশ পাঠানো হয়নি। ফলে পুলিশি চরম গাফিলতির জন্যই ওই নাবালিকা খুন হয়েছে এই অভিযোগ সামনে এনে রাতে তিলজলা থানার সামনে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন।
এরপরই তাঁরা তিলজলা থানার মূল ফটক ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। পাশাপাশি ঘটনাস্থলে নামানো হয় হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড। এলাকাজুড়ে যাতে কোনও রকমে বিক্ষিপ্ত অশান্তি যেন আর তৈরি না-হয় তার জন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা মৃতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের নাম অলক কুমার। এই কথা এলাকার বাসিন্দাদের জানায় পুলিশ ৷ উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে বিহার থেকে তিলজলা থানায় এলাকার 21 নম্বর শ্রীধর রায় রোডে বসবাস করতে থাকে ওই মৃত নাবালিকার পরিবার । কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রেফতারের কথা খুন হয়ে যাওয়ার পরে কেন জানানো হল? কেন পুলিশ প্রথম পর্যায়ে তদন্তে নামল না? কেনইবা ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হল না?
আরও পড়ুন: নাবালিকা পর্যটককে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার লজের কর্মী