কলকাতা, 30 জুন: হরিদেবপুরকাণ্ডে কলকাতা পৌর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে তিন আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও এক এসএই-কে (SAE) সাসপেন্ডের নির্দেশ দিয়েছে। যদিও সেই সংক্রান্ত নির্দেশ এখনও লিখিতভাবে হাতে পাননি সংশ্লিষ্ট ওই মহিলা এসএই ৷ এমনটাই খবর পৌরনিগম সূত্রে। কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন পৌর ইঞ্জিনিয়াররা (Agitation of Engineers over Suspention of SAE)।
প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতে ইঞ্জিনিয়ারদের উপর কোপ দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ ৷ এই দাবি করে কেএমসি ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আলায়েড সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ দেখায়। প্রতিবাদ জানিয়ে পৌরনিগমের কেন্দ্রীয় ভবনের সামনে থেকে মিছিল করেন তারা। কর্মীবর্গ বিভাগ, জল সরবরাহ, স্বাস্থ্য, কর মূল্যায়ণ, নিকাশি-সহ একাধিক বিভাগে মিছিল ঘুরে মেয়র্স গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সাসপেনশন অবিলম্বে তোলার দাবি জানিয়ে স্লোগান তোলেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ-মিছিলে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি পার্থ গুপ্ত, সম্পাদক মানস সিনহা। এছাড়াও ছিলেন কেএমসি ক্লার্কস ইউনিয়নের সম্পাদক অমিতাভ ভট্টাচার্য, রতন ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন : হরিদেবপুরকাণ্ড নিয়ে ঘটনাস্থলে দুঃখপ্রকাশ তারক সিংয়ের
এদিন মানস সিনহা বলেন, "আমাদের এক মহিলা এসএই-কে সাসপেন্ড করা হয়েছে। লিখিত নির্দেশিকা এখনও পায়নি। সংবাদমাধ্যমে তাঁর নাম জানা গিয়েছে। বলা হয়েছে এই ঘটনায় তিনি দায়ী। আমরা বারবার কর্তৃপক্ষকে বলেছি শূন্য পদে লোক নিয়োগ করতে হবে। প্রতি ওয়ার্ডে 12-14 জন করে কর্মী থাকত তাঁরা রক্ষণাবেক্ষণ করত ৷ সেই নিয়োগ বন্ধ। এসএই-কে ঘুরে সাড়ে তিন হাজার ল্যাম্পপোস্ট দেখতে হবে ? ওই মহিলা ইঞ্জিনিয়ারের ওপর দুটি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দিয়েছিল।"
তিনি আরও বলেন, "ওই ইঞ্জিনিয়ার স্পষ্ট জানিয়েছেন, ওটা বিএসএনএল পোস্ট ছিল সেখানে পৌরনিগম কোনও লাইট লাগাইনি। তিনি কোনও নির্দেশ দেননি ৷ তাহলে কীসের ভিত্তিতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে সাসপেনশনের কথা ছড়িয়ে দেওয়া হল ? এটা চক্রান্ত। তদন্ত কমিটির মুখোমুখি বসানো হয়নি ইঞ্জিনিয়ারকে। কারও বয়ানও নেওয়া হয়নি। মাত্র 30 জনকে দিয়ে 144টি ওয়ার্ডের কাজ করানো হচ্ছে। স্থায়ী পদে লোক নেবে না, অথচ যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের উপর বাড়তি বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষ আক্রান্ত হলে ইঞ্জিনিয়ারকে বলির পাঠা করা হবে।"
আরও পড়ুন : হরিদেবপুরকাণ্ডে চূড়ান্ত গাফিলতির ইঙ্গিত কেএমসি-র তদন্ত কমিটির রিপোর্টে
শুধু তাই নয়, কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানস সিনহা আরও বলেন, "সারা কলকাতা জুড়ে এই প্রশাসন অগণতান্ত্রিকভাবে ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে বেআইনি কাজ করাচ্ছে। গভীর নলকূপ যথেচ্ছ খোলা অবস্থায় চালানো হচ্ছে কারো থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হচ্ছে না। কোনও কর্মীকে দিয়ে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করানো হয় না। এসব অনৈতিক কাজের প্রতিবাদে আমরা ইঞ্জিনিয়াররা আজ পথে নেমেছি পৌর প্রশাসনের বিরুদ্ধে।"