কলকাতা, 5 অক্টোবর : ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI)-এর কারণে 69 বছর বয়সি এক ব্যক্তিকে নিউ আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছিল । অভিযোগ, ওই হাসপাতাল থেকে বলা হয়, আগে কোরোনা পরীক্ষা করা হবে তারপর এই রোগীর অন্য চিকিৎসা করানো হবে । এরপরে এই রোগীর কোরোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । তাঁকে তখন অন্য হাসপাতালে চলে যাওয়ার কথা বলা হয় । এদিকে এই রোগী ওই হাসপাতালে ভরতি ছিলেন 28 ঘণ্টা । আর এই সময়ের জন্য তাঁর চিকিৎসার খরচ হিসাবে 92 হাজার টাকার বিল করা হয় বেসরকারি ওই হাসপাতালের তরফে । এই ঘটনায় ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনে (WBCERC) অভিযোগ দায়ের করা হয় । মামলার শুনানিতে বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে রোগীকে 50 হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয় । এক সপ্তাহের মধ্যে এই 50 হাজার টাকা রোগীকে দেওয়ার জন্য বেসরকারি ওই হাসপাতালকে নির্দেশ দেয় রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন ।
69 বছর বয়সী ওই রোগী কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলের বাসিন্দা । গত 11 মে বেলা 12টা 54 মিনিট নাগাদ নিউ আলিপুরের বেসরকারি ওই হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছিল বলে জানিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন । কমিশন জানিয়েছে, প্রৌঢ় ওই হাসপাতালের পুরোনো রোগী । প্রস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসা হিসেবে ওই হাসপাতালে এই প্রৌঢ়র অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল । অস্ত্রোপচারের পরে হাসপাতাল থেকে বাড়িতেও ফিরে গিয়েছিলেন তিনি । এর পরে জ্বরে আক্রান্ত হন । তাঁর UTI-এর কারণে গত 11 মে আবার নিউ আলিপুরের বেসরকারি ওই হাসপাতালে তাঁকে ভরতি করানো হয়েছিল ।
রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে বলা হয় যে, গত 11 মে ভরতি হওয়ার পরে বেসরকারি ওই হাসপাতাল থেকে এই রোগীকে বলা হয়, আগে COVID-19 টেস্ট করাতে হবে । পরে তাঁর অন্য চিকিৎসা করা হবে । এই রোগীর COVID-19 টেস্ট করানো হয় । এই টেস্টের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। অভিযোগ, এর পরে ওই হাসপাতাল থেকে এই রোগীকে তিন ঘণ্টার মধ্যে অন্য হাসপাতালে চলে যাওয়ার কথা বলা হয় । কমিশন জানিয়েছে, একদিন বেসরকারি ওই হাসপাতালে ভরতি থাকার জন্য এই রোগীর চিকিৎসার খরচ হিসাবে 92 হাজার টাকা বিল করা হয় । এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য 36 হাজার টাকা বিল করা হয়েছে । ওষুধের জন্য বিল করা হয়েছে 15 হাজার টাকা, চিকিৎসকের ফি হিসাবে 12 হাজার টাকার ধরা হয়েছে । এ ভাবে 92 হাজার টাকার বিল করা হয়েছে । কমিশন তরফে বলা হয় যে, এই রোগী 28 ঘণ্টা ভরতি ছিলেন ওই হাসপাতালে । এর জন্য দুই দিনের বেড চার্জ ধরা হয়েছে 22 হাজার টাকা ।
সোমবার শুনানির সময় বেসরকারি ওই হাসপাতালের আইনজীবী পাঁচ মিনিট সময় চেয়ে নেন । এর পরে তিনি জানান, এই বিল থেকে 10 হাজার টাকা ছাড় দেওয়ার কথা এই হাসপাতালের তরফে এই অভিযোগকারীকে আগে জানানো হয়েছিল । ছাড় দিতে চাওয়া টাকার এই অংক 10 হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে 50 হাজার টাকা করেছে হাসপাতাল । 50 হাজার টাকা ছাড় দেওয়ার কথা জানার পরে এই মামলা আর চালাতে চাননি অভিযোগকারী।
রাজ্যের এই স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারপার্সন জাস্টিস (অবসরপ্রাপ্ত) অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, "এক সপ্তাহের মধ্যে এই 50 হাজার টাকা এই অভিযোগকারীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বেসরকারি ওই হাসপাতালকে আমরা বলেছি ।"