কলকাতা, 22 ডিসেম্বর : এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ বাঁচানো সম্ভব হয়নি এক কোরোনা রোগীকে। এদিকে বেসরকারি হাসপাতালে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য খরচ হয়ে গিয়েছে লাখ লাখ টাকা। বকেয়া বিল হিসাবেও রয়েছে কয়েক লাখ টাকা। এই অবস্থায় রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশনে মৃত এই রোগীর পরিজনদের আবেদন , তাঁদেরকে যেন বাঁচানো হয়। অবশেষে 39 লাখ 62 হাজার 230 টাকার ওই বিল খতিয়ে দেখে বেসরকারি ওই হাসপাতালকে 10 লাখ 62 হাজার টাকা ছাড় দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য কমিশন।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন (WBCERC) জানিয়েছে, এই কোরোনা রোগী উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটা অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন । পেশায় কৃষক । বছর 45-এর এই রোগীকে প্রথমে ফুলবাগান অঞ্চলে অবস্থিত বেসরকারি একটি নার্সিংহোমে 17 অক্টোবর ভরতি করা হয়েছিল । কোরোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। ওই নার্সিংহোমেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল । তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমে জটিল হতে থাকে। এরপর তাঁকে 23 অক্টোবর স্থানান্তর করা হয় মুকুন্দপুরে অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালে । ওই দিন থেকেই সেখানে তাঁকে এক্সট্রা করপোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজ়েনেশন (ECMO)-এর সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। সেখানেই 22 নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।
23 অক্টোবর থেকে 22 নভেম্বর পর্যন্ত এই রোগীকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা ECMO-র সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। এই চিকিৎসার জন্য ততদিনে 26 লাখ টাকা দিয়েছিলেন পরিজনরা । কমিশন জানিয়েছে, ECMO-র সাপোর্টে চিকিৎসার জন্য বিল হয় 39 লাখ 62 হাজার 230 টাকা । এর মধ্যে 26 লাখ টাকা দেন পরিজনরা । অল্প ছাড় দিয়ে এই বিল করা হয়েছিল। রোগীর মৃত্যুর পর বিলের বাকি টাকা দেওয়ার জন্য পরিজনদের চাপ দিতে থাকে ওই হাসপাতাল। এরপর পরিজনরা কমিশনে আবেদন করেন, তাঁদের খুব খারাপ অবস্থা । তাঁদের যেন বাঁচানো হয়।
এরপর ওই বিল খতিয়ে দেখে কমিশন মনে করে বেশ কিছু জায়গায় ছাড় দেওয়া যায় । বিল থেকে 10 লাখ 62 হাজার টাকা ছাড় দেওয়ার জন্য বেসরকারি ওই হাসপাতালকে বলা হয়েছে । আর 26 লাখ বাদ দিয়ে এই রোগীর পরিজনদের আরও 3 লাখ টাকা ওই হাসপাতালকে দিতে বলা হয়েছে ।