কলকাতা, 7 ডিসেম্বর: আগামী 13-16 ডিসেম্বর হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এসএফআইয়ের 17-তম জাতীয় সম্মেলন ৷ তিনদিনের এই সম্মেলনে রাজ্যভিত্তিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর । একইসঙ্গে দেশ জুড়ে জাতীয় শিক্ষানীতি, বেকারত্ব ও বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধেও আগামীর পরিকল্পনা গৃহীত হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ তিনদিনের এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন এসএফআই নেতা মানিক সরকার । এছাড়াও উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন সমাজসেবী তিস্তা শেতলওয়াড় ও বিচারপতি চান্দ্রু ।
এসএফআইয়ের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের বক্তব্য, "17-তম সম্মেলন থেকে আগামী দিনে লড়াইয়ের রূপরেখা তৈরি হবে । ইস্যু হিসাবে অবশ্যই থাকবে জাতীয় শিক্ষানীতির গৈরিকীকরণের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে আন্দোলন সংগঠিত করা, বেকারত্ব দূরীকরণে কেন্দ্র-রাজ্য উভয় সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা, বিজেপি আরএসএস যেভাবে সাধারণ মানুষ তথা ছাত্র সমাজের মধ্যে নানাভাবে যে বিভাজন সৃষ্টি করছে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করে ঐক্যবদ্ধ করা ।
আরও পড়ুন : 'এক ভাষা, এক ধর্ম চাপিয়ে দিতে চাইছে বিজেপি', প্রতিবাদে এসএফআই
জাতীয় শিক্ষানীতির বিরূদ্ধে প্রথম থেকেই বিরোধিতায় নেমেছে বামেরা । তাদের অন্যতম বড় ছাত্র সংগঠন এসএফআই এই শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে পূর্ব ভারত জুড়ে জাঠা করেছে । এবার জাতীয় সম্মেলন আলোচনা । এসএফআইয়ের মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে জাতীয় শিক্ষানীতির একটি খসড়া 2019 সালে রয়্যাল সাইজের 470 পৃষ্ঠায় প্রকাশ করা হয় । তার প্রতিবেদনের ভাষা ছেলেমানুষি ও উচ্ছ্বাসে ভরা । 2020 সালের আসল শিক্ষানীতিতে ওই উচ্ছ্বাস কমে গিয়ে পৃষ্ঠা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সর্বসাকুল্যে 66-তে । অঙ্গনওয়াড়ি থেকে ক্লাস টু, তারপর থ্রি থেকে ফাইভ, তারপর সিক্স থেকে এইট, তারপর একটা নাইন থেকে বারো। মাধ্যমিক পরীক্ষা বলে কিছুই থাকবে না নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে । অর্থাৎ, মাধ্যমিক সার্টিফিকেট নিয়ে যে কিছু চাকরি পাওয়া যেত তা বন্ধ হয়ে যাবে। পরবর্তীতে বোধহয় বারো ক্লাসের সার্টিফিকেট নিয়ে সেই সব চাকরির দরখাস্ত করতে হবে । মানে প্রাথমিক বেকারত্বের মেয়াদ 2 বছর বাড়ানো হল। তারপর উচ্চশিক্ষা তারও পুনর্গঠন হয়েছে । এরকম একাধিক ভুল ত্রুটির কথা তুলে ধরা হয়েছে এসএফআইয়ের তরফে ।
এই বিষয়ে এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন,"আমাদের জাতীয় সম্মেলনের তিনটি মূল দাবি রয়েছে । সকলের জন্য শিক্ষা, বেকারের কাজ দাও ও বিভাজনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হও । যার কোনওটাই কেন্দ্র ও রাজ্য কোনও সরকারই করছে না । তার বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন । আরএসএস বিজেপির অ্যাজেন্ডা মেনে বিভিন্ন রাজ্য সরকার চলছে । পশ্চিবঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে । স্কুল বন্ধ হয়েছে । স্কুল ছুটের সংখ্যা বেড়েছে । আর সরকার চুপ । খেলা মেলায় ব্যস্ত । অন্ধ্রপ্রদেশে ওয়াইএসআর কংগ্রেস সরকারও কার্যত একই লাইন ধীরে চলছে । সামগ্রিকভাবে গোটা দেশের ছাত্র সমাজ ও শিক্ষার মানোন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য ।"
আরও পড়ুন : শিক্ষায় গৈরিকীকরণের চেষ্টা চলছে, দাবি এসএফআইয়ের