কলকাতা, 26 জুন : বিদেশ থেকে রাজ্যে ফিরলেই থাকতে হবে কোয়ারানটিনে । কিন্তু রাজ্যে ক্রমাগত কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় খালি নেই কোয়ারানটিন সেন্টার । তাই রাজ্যে এলেই চলে যেতে হবে পেইড কোয়ারানটিনে । গতকাল এই পেইড কোয়ারানটিনে থাকতে চাননি কিরগিজ়স্তান ফেরত 151 জন পড়ুয়া । পুলিশ বিমানবন্দরে আটকালে চলে বিস্তর ঝামেলা । হয় ধস্তাধস্তিও । মাঝরাতে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা । বিক্ষোভে সামিল হয় তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও । পড়ুয়াদের একাংশ পুলিশের ব্যারিকেড টপকে পালাতে গেলে ফের পুলিশ আটকায় তাঁদের । পড়ে ধস্তাধস্তি করে কার্যত সরকারি নিয়ম না মেনেই যে যার বাড়ি ফিরে যান ।
রাজ্যের বাইরে থেকে ফিরলে বা বিদেশ থেকে ফিরলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সকলকেই থাকতে হচ্ছে কোয়ারানটিনে । বেশিরভাগ রাজ্যেই এক্ষেত্রে হোম কোয়ারানটিনের ব্যবস্থা রয়েছে । কিন্তু রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিদেশ থেকে ফেরা মানুষজনকে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারানটিনে রাখা হচ্ছে । সেক্ষেত্রে পুরোপুরি সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টারগুলি ভরতি থাকায় শহরের পাঁচতারা বা তিন তারা হোটেলে কোয়ারানটিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে । তবে, এক্ষেত্রে টাকা দিতে হবে যাঁরা ফিরছেন তাঁদেরই । অর্থাৎ পেইড কোয়ারানটিন । হোটেলগুলিতে 14 দিন থাকার জন্য যেতে পারে মোটা অঙ্কের টাকা । বিমানবন্দরে নামলেই পুলিশের মাধ্যমে হোটেলগুলির আধিকারিকদের কাছে নাম নথিভুক্ত করানো হচ্ছে ।
গতকাল বন্দে ভারত মিশনের আওতায় কিরগিজ়স্তান থেকে রাজ্যে ফেরেন 151 জন পড়ুয়া । তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার এরাজ্যের বাসিন্দাও নন । কলকাতা থেকে অন্য বিমানে নিজের রাজ্যে ফিরবেন । পড়ুয়াদের অভিযোগ, সকলকেই বিমানবন্দরে নামার পর নিয়ম অনুযায়ী পেইড কোয়ারানটিনে যেতে বলা হয় । কিন্তু প্রত্যেকেই মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হবে এই ভেবে পেইড কোয়ারানটিনে যেতে অস্বীকার করেন তাঁরা । তাঁদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেন, সকলে মেডিকেলের পড়ুয়া ফলে জানা আছে, কীভাবে সেলফ কোয়ারানটিনে থাকতে হয় । তাঁরা দাবি করে, হোটেলে থাকার বদলে বাড়িতেই সেফল কোয়ারানটিনে থাকবেন । কিন্তু এ দাবি মানতে অস্বীকার করে বিমানবন্দরে উপস্থিত পুলিশ । তাঁরাও নিয়ম মেনে নাম নথিভুক্ত করানোর কাজ শুরু করে । এদিকে, বিমানবন্দরের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পড়ুয়াদের পরিবারের সদস্যরা । তাঁরা অভিযোগ তোলেন, সরকার ব্যবসা করছে এভাবে । যাঁরা ফিরছেন তাঁদের যদি সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টারে বিনামূল্যে না রাখতে পারে তাহলে বাড়িতে থাকতে দেওয়া হোক । পুলিশ বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তাঁদের ।
এদিকে বিমানবন্দরের ভিরতেও চার ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান পডু়য়ারা । বাড়ি ফেরার দাবি জানালে পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে । পড়ে তাঁরা ব্যরিকেড টপকে পুলিশকে সরিয়ে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যান । সেখানেও ব্যারিকেড থাকায় ফের পুলিশ আটকায় তাঁদের । কিন্তু পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পর ফের সেখান থেকে বেরিয়ে যান তাঁরা ।
বিমানবন্দর থানার এক আধিকারিক জানান, পড়ুয়াদের নামের তালিকা ও আধারকার্ড থেকে ঠিকানা বের করে একটি তালিকা করা হয়েছে । ঠিকানা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জেলা শাসকদের কাছে ঠিকানা পাঠানো হবে ।