কলকাতা, 4 জুলাই : শহরের রাস্তায় মহিলা বক্সার হেনস্থা হোক বা জোড়াবাগানের ডাকাতি । CCTV ফুটেজ়ই হয়েছিল কলকাতা পুলিশের তুরুপের তাস । যেকোনও অপরাধের ক্ষেত্রে অপরাধীকে চিহ্নিত করতে পুলিশ প্রাধান্য দিয়েছে ওই এলাকার CCTV ফুটেজ়কে । অপরাধী চিহ্নিত করতে এবং শহরবাসীকে সুরক্ষা দিতে এবার আরও 10 হাজার CCTV ক্যামেরা বসতে চলেছে কলকাতায় । লালবাজার সূত্রে এমন খবরই মিলেছে ।
নিউ আলিপুরের মলয় মুখোপাধ্যায় খুনের ঘটনা । তাঁর বাড়ির কাছে CCTV ক্যামেরা ছিল না । তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে কিছুটা সমস্যায় পড়ে পুলিশ । পরে অনেকটা দূরের একটি ক্যামেরা খতিয়ে দেখে পাওয়া গেছিল দুষ্কৃতীদের ছবি । তা দেখেই এই খুনের কিনারা করতে অনেকটাই সুবিধা পায় লালবাজারের হোমিসাইড শাখা । আবার বাঁশদ্রোণীতে একটি ফ্ল্যাটের চুরির ঘটনায় CCTV ফুটেজ়ে দেখা যায় এক ব্যক্তি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে বেরিয়ে যাচ্ছে । অ্যান্টি রবারি সেকশন বুঝে যায় এই কাজ 'ল্যাংড়া গৌতম'-এর করা ।
সম্প্রতি জোড়াবাগানে ডাকাতির ঘটানায় 'পূজারি'কেও চিহ্নিত করা হয়েছিল CCTV ফুটেজ় দেখে । অন্যদিকে, বেনিয়াপুকুরে যে ডাকাতির ঘটনার কিনারা হয়নি তাতে পাওয়া যায়নি CCTV ফুটেজ় । কারণ, ফুটেজ় সংরক্ষণের কম্পিউটারের হার্ডডিক্স দুষ্কৃতীরা ভেঙে দিয়েছিল । ওই ঘটনার তদন্তে এখনও পর্যন্ত ব্যর্থ পুলিশ । সুতরাং বোঝা যাচ্ছে এই মুহূর্তে পুলিশ CCTV-র ওপর কতখানি নির্ভরশীল । লালবাজারের এক সিনিয়র গোয়েন্দা বলছেন, "আজকাল 50 শতাংশ অপরাধের কিনারা করে দিচ্ছে CCTV । সেটা চুরি হোক কিংবা ডাকাতি, খুন ছিনতাই, গাড়িচুরি সবেতেই সহায় হয়ে উঠেছে এই যন্ত্রটি।"
তথ্য বলছে, কলকাতার মূল এলাকাগুলি যেভাবে CCTV দিয়ে মোড়া রয়েছে, অ্যাডেড এরিয়ায় ততটা নেই । অথচ এখন চুরি বা ওই ধরনের অপরাধ অ্যাডেড এরিয়াতে বেশি হচ্ছে । লালবাজার সূত্রের খবর, পুলিশ কমিশনার থাকাকালীন রাজীব কুমার ক্রাইম কনফারেন্সে CCTV লাগানোর ওপর জোর দিয়েছিলেন । বর্তমান পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও জোর দিয়েছেন বিষয়টিতে । সেই সূত্রেই খুব শীঘ্রই প্রত্যেকটি থানা এলাকার CCTV বিহীন গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিং, রাস্তা, অপরাধপ্রবণ এলাকার চিহ্নিত করার কাজ শুরু হবে । তারপর সেই অঞ্চলগুলিতে বসানো হবে CCTV । লালবাজারের এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে 10 হাজার CCTV বসানোর কাজ সম্পন্ন হবে ।