কালিম্পং, 12 জুন: রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে হড়পা বানের জেরে ধস নামল কালিম্পঙে । তাতে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকটি বাড়ি । আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে মানুষ । ব্যাহত সেবক-রংপো প্রকল্পের কাজ । যদিও হড়পা বান ও ধসের কারণ হিসেবে সেবক-রংপো রেল প্রকল্পকেই দায়ী করেছেন পাহাড়বাসীরা ।
রবিবার রাত থেকে পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স-সহ গোটা উত্তরবঙ্গজুড়ে শুরু হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত । আর সেই বৃষ্টিপাতের জেরে কালিম্পং জেলার রম্ভি এলাকায় নামল ধস । ধসের জেরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে 10 নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ-সহ রন্দি বাজার গ্রামের একাধিক বাড়ি । ব্যাহত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সেবক-রংপো রেল প্রকল্পের কাজ । সেখানে প্রকল্পের দ্বিতীয় রেল স্টেশন রিয়াঙের স্টেশন ইয়ার্ড তৈরির কাজ চলছে । বৃষ্টির জেরে সেই কাজও ব্যাহত হয়েছে ।
তবে হড়পা বান ও ধসের জন্য রেল প্রকল্পকেই দায়ী করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ তাঁদের অভিযোগ, যেভাবে গ্রামের কথা চিন্তা না করে রেল প্রকল্পের কাজ চলছে, তাতেই ক্ষতি হয়েছে । পাহাড় থেকে নেমে আসা জল নিকাশির মাধ্যমে বের করার কোনও জায়গা করা হয়নি । এমনকী প্রকল্পের কাজের সময় বড় বড় যন্ত্র চলার ফলে বেশ কয়েকটি বাড়ি আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এ বার বর্ষার আগেও ধস আটকানোর কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি । যার জেরে আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে ।
আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টির জেরে আবারও ধস কালিম্পংয়ে, ধস নামল দার্জিলিংয়েও
যদি অবিলম্বে পদক্ষেপ করা না হয়, তাহলে আরও বৃষ্টি হলে গোটা গ্রাম ধসে চাপা পড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । ধসের জেরে কর্ণ বাহাদুর ছেত্রী, পাপ্পু খাতি ও গিতা সিলাল নামে তিনজনের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে । ঘটনার পর উদ্ধারকাজে নামে বিপর্যয় মোকাবিলা দল ।
এই বিষয়ে কালিম্পংয়ের জেলাশাসক আর বিমলা বলেন, "ইতিমধ্যে সেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা দল উদ্ধারকাজে নেমেছে । বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । ধস আটকাতে রেল কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে ।"
দীপসোনি সিলাল বলেন, "সারা রাত আতঙ্কে কাটিয়েছি । আর একটু বৃষ্টি হলেই বাড়ি ধসে যেত । ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব ভেবে পাচ্ছি না ।" স্থানীয় বাসিন্দা রাজেন মুখিয়া বলেন, "এই ধসের জন্য সেবক-রংপো রেল প্রকল্প দায়ী । আমরা বহুবার বলেছি গ্রামের জন্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে । কিন্তু তা করা হয়নি ৷ যদিও রেল প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার অরুণ বরণ পাত্রের দাবি, "এই ধরনের প্রবল বৃষ্টি হবে তা আমরা ভাবতে পারিনি । তবে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে ।"